মোদী সরকার থাকাকালীন বাংলায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল একশো দিনের কাজ ও বকেয়া টাকা দেওয়া। আবাস যোজনার ক্ষেত্রেও একই পথে হাঁটতে দেখা গিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারকে। যা নিয়ে আন্দোলন করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বকেয়া থাকা ১০০ দিনের কাজের টাকা গরিব মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দিয়ে দেয়। তারপরই লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক সাফল্য আসে তৃণমূল কংগ্রেসের। আর এবার বাংলায় আবাস যোজনা, একশো দিনের কাজ চালুর পক্ষে সওয়াল করলেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ।
লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পরই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করে ছিলেন সৌমিত্র খাঁ। এবার ১০০ দিনের কাজ এবং আবাস যোজনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে সৌমিত্র চিঠি লিখবেন বলেও জানালেন। এই বিষয়ে মঙ্গলবার রাতে বাঁকুড়ায় সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘আমরা চাই পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন হোক। গরিব মানুষের জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা যেটা গোটা ভারতবর্ষ পাচ্ছে সেটা আমার এলাকার গরিব মানুষ যেন পায়। তার জন্য আমি আগামী ২৪ জুন প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেব। আমি চাই এখানে ১০০ দিনের কাজ চালু হোক। বাংলায় গরিব মানুষ ১০০ দিনের কাজ পাক।’ সৌমিত্রের এই কথা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
আরও পড়ুন: অশান্ত মণিপুরে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় সিআরপিএফ জওয়ানদের বাস, তারপর কী ঘটল?
এখানেই শেষ নয়, ভোটের ফল বেরনোর পরই নিজের দলের রাজ্য নেতৃত্বের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। এবার বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে তিনি জানিয়ে দিলেন, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করতেও তাঁর কোনও আপত্তি নেই। তাঁর বক্তব্য, ‘একশো দিনের কাজ, আবাস যোজনার মতো প্রকল্পের টাকা আটকে রেখে ভোটে ভাল ফল করা যায় না। আমি চারবার জিতেছি। তিনবার সাংসদ এবং একবার বিধায়ক। একজনকে মানুষ চারবার ভোট দিচ্ছে সেটা তো এমনি এমনি মুখ দেখে দিচ্ছে না। নিশ্চয়ই কাজ, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড দেখে দিচ্ছে। শুধুমাত্র বিরোধীদের মতো কথাবার্তা বলে, ১০০ দিনের টাকা আটকে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার কাজ না করে ভাল ফল হয় না। এবার আমাদের অন্যভাবে ভাবতে হবে।’
এছাড়া বিজেপির রাজ্য নেতাদের সমালোচনা এবং তৃণমূল কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব প্রসঙ্গে ইতিবাচক মন্তব্য করতে থাকায় স্বাভাবিকভাবেই সৌমিত্র খাঁয়ের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। যদিও সৌমিত্রের কথায়, ‘আমি বিজেপির প্রতীকে জিতেছি। সেই প্রতীকের অমর্যাদা আমি করব না। দলের কর্মীদের অমর্যাদা করব না। তবে রাজ্য নেতৃত্বের উপরে আমার রাগও নেই, ভালবাসাও নেই। কারণ বৃদ্ধদের উপরে রাগ করা যায় না। আর মুখ্যমন্ত্রী যদি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন, তাহলে বিষ্ণুপুর, বাঁকুড়ার উন্নয়নের স্বার্থে আমিও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে পারি। মুকুটমণিপুরে, বাঁকুড়া–রানিগঞ্জ রুটে রেলপথের আবেদন করব। দুর্লভপুর পর্যন্ত যাতে দ্রুত ট্রেন চলে তার জন্য রেলমন্ত্রীকে জানাব। আমি উন্নয়ন চাই।’