আজই হতে চলেছে দ্বিতীয় নরেন্দ্র মোদী সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ। বাংলা থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হচ্ছেন বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর এবং কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। ইতিমধ্যে রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিতে বলা হয়েছে। দিল্লিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে শান্তনু ঠাকুরের। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে মতুয়া ভোটকে পাখির চোখ করেছিল বিজেপি। তবে সপ্তাহ তিনেক আগে মতুয়া সম্প্রদায়ের অন্যতম মুখ শান্তনু ঠাকুরের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে শুরু হয়েছিল জোর জল্পনা। অবশেষে তাঁকে মন্ত্রী করে সেই জল্পনার ইতি টানা হল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
এদিন জল্পনা ছিল প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে যাঁদের দেখা যাচ্ছে, মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণে সম্ভবত তাঁদেরই ভাগ্যের শিকে ছিঁড়তে চলেছে। সেখানে শান্তনু ঠাকুরকেও দেখা গিয়েছিল অন্যান্যদের সঙ্গে। তাঁর ভাগ্যেও শিকে ছিঁড়ল। বর্তমানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় মোট ৮১ জন মন্ত্রী হতে পারেন। বর্তমানে ৫২ জন মন্ত্রী রয়েছেন। ২৯টি পদ ফাঁকা রয়েছে। এবার পূর্ণমন্ত্রীর পদ পেতে পারেন ছয় জন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশ সফরেও গিয়েছিলেন শান্তনু ঠাকুর।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, শান্তনু ঠাকুরকে কেন মন্ত্রী হচ্ছে? জানা গিয়েছে, মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসে প্রত্যাবর্তনের দিনই বনগাঁয় দিলীপ ঘোষের বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন তিন বিধায়ক। ছিলেন না সাংসদ শান্তনু ঠাকুরও। আর তাতেই তুঙ্গে ওঠে চর্চা। তারপর একুশের নির্বাচনের আগেই শান্তনু ঠাকুর ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন সিএএ কার্যকর না হওয়া নিয়ে। নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবির পর শান্তনু কি বিজেপির হাতছাড়া হতে পারেন? তা নিয়ে জল্পনা চলতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে তাঁকে মন্ত্রী করে এক ঢিলে দুই পাখি মারা হল। এক, শান্তনুকে শান্ত করা হল। দুই, মতুয়াদের বার্তা দেওয়া হল কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের পাশেই আছে।
যদিও শান্তনু ঠাকুর মন্ত্রী হবার খবরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মমতাবালা ঠাকুর বলেন, ‘শান্তনু ঠাকুর সাংসদ হওয়ার পরে মানুষের যে আশা–আকাঙ্ক্ষা ছিল সেটা পূরণ করতে পারেননি। সাংসদ–বিধায়ক হয়ে চেয়ার বসে যদি কাজই না করতে পারি তাহলে মন্ত্রী বানিয়ে কি হবে? মন্ত্রী হলে ব্যক্তিগত শান্তনু ঠাকুরের লাভ হবে। মতুয়াদের কোন লাভ হবে না।’ সুতরাং সরাসরি একটা ভাঙন আবার দেখা দিল। দুটি গোষ্ঠীতে আড়াআড়িভাবে ভাগ হয়ে গেল মতুয়া সমাজ বলে মনে করা হচ্ছে।