বিধানসভা নির্বাচনের মুখে বেসুরো বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকরের দাবিতে এবার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে চিঠি দিতে চলেছেন তিনি। আর সেই চিঠির খসড়া তৈরি করে দিয়েছেন বিজেপি নেতা তথাগত রায়। রাজ্যপালের পদ থেকে অব্যহতি নিয়ে সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরতে মরিয়া তিনি।
বুধবার ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়িতে গিয়ে শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে বৈঠক করেন তথাগতবাবু। কেন্দ্রকে শান্তনু যে চিঠি দেবেন তাঁর খসড়া তাঁর হাতে তুলে দেন তিনি। এর পর শান্তনু বলেন, ‘নাগরিকত্ব আইন পাশ হয়ে গেলেই সমস্যার সমাধান হয় না। মতুয়াদের নাগরিকত্ব না দেওয়া হলে আইন করে কী লাভ। আর সেই আইন তিন মাসের মধ্যে কার্যকর করা না হলে ফের সংসদে তা পাশ করাতে হবে। এই নিয়ে উদ্বিগ্ন মতুয়া সমাজ।’
শান্তনু ঠাকুরের দাবি, ‘মতুয়া সমাজের প্রতিনিধি হিসাবে যোগ দিলে CAA কবে কার্যকর হবে তা নিয়ে প্রশ্ন করেন মানুষজন। কিন্তু আমার কাছে কোনও উত্তর থাকে না। এই নিয়ে অস্বস্তিতে পড়তে হয় আমাকে।’ তাঁর দাবি, ‘CAA লাগু না হলে মতুয়া সমাজ যে সিদ্ধান্ত নেবে আমার সিদ্ধান্তও তাই হবে।’
যদিও শান্তনুর চিঠিতে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে বিজেপিতে তথাগতর মতোই কোণঠাসা শান্তনুও। সক্রিয় রাজনীতিতে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেও বিজেপির রাজ্য কমিটিতে ঠাঁই হয়নি তথাগত রায়ের। ওদিকে বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে মোটেও সম্পর্ক ভাল নয় শান্তনুর। বিশেষ করে জেলা সভাপতি শংকর চক্রবর্তীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আদায় কাঁচকলায়। শঙ্করবাবুর মাথার ওপর আবার রয়েছে দিলীপ ঘোষের হাত। শান্তনুর সঙ্গে শংকরের দ্বন্দ মাঝেমাঝেই প্রকাশ্যে চলে আসে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে আবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় জায়গা পেতে নিজের দর বাড়ানোর চেষ্টায় রয়েছেন শান্তনু। সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের আগে রদবদল হতে পারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়। তাতে জায়গা পেতে পারেন পশ্চিমবঙ্গের একাধিক সাংসদ। সেই তালিকায় নাম রয়েছে শান্তনুও। তবে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর যা সম্পর্ক তাতে শান্তনুর নামে তাঁদের অনুমোদন পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। আর তাই নিজের দর নিজেই বাড়াতে নেমেছেন তিনি।