একদা একসঙ্গে সংসার করেছিলেন। রাজনৈতিক অবস্থান বদলের জেরে এক ছাদের নীচে না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্য–রাজনীতিতে চর্চিত নেতা–নেত্রী। আজ, সোমবার তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদের মামলার শুনানি ছিল বাঁকুড়া জেলা আদালতে। সেখানে হাজির হন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ এবং তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী সুজাতা মণ্ডল। স্বাভাবিক কারণে ক্যামেরার ফোকাস ছিল তাঁদের দিকেই। রাজ্য–রাজনীতিতে যুযুধান প্রতিপক্ষের বিবাহবিচ্ছেদের মামলা শুনতে অনেকেই আগ্রহের সঙ্গে এখানে আসেন। যদিও আগে দু’জনেই পৃথকভাবে আদালতে হাজির হয়ে মিউচুয়াল ডিভোর্সের মামলা দায়ের করেছিলেন। বাঁকুড়া জেলা আদালতের দ্বিতীয় অতিরিক্ত দায়রা বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে চলে শুনানি।
ঠিক কী হয়েছে বাঁকুড়া জেলা দায়রা আদালতে? আজ, সোমবার প্রায় এক ঘণ্টা ধরে দু’জনের উপস্থিতিতে চলে শুনানি। সেখানে সুজাতা মণ্ডল খাঁ জানান, এই বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় তাঁর কোনও দাবি–দাওয়া নেই। তবে দ্রুত এই মামলার নিস্পত্তি চান তিনি। আর বিজেপি নেতা সৌমিত্র খাঁর আইনজীবী জানান, মামলাটি দ্রুত নিস্পত্তির জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছিল। আজ তারই শুনানি হয়েছে। আদালত দু’পক্ষের কাছেই তাঁদের সম্পর্ক নিয়ে জানতে চেয়েছেন। দু’পক্ষই বিবাহবিচ্ছেদের বিষয়ে আদালতের কাছে তাঁদের সম্মতি জানিয়েছেন।
আদালতে ঠিক কী হয়েছে? এদিন বাঁকুড়া জেলা আদালতের দ্বিতীয় অতিরিক্ত দায়রা বিচারক প্রশান্ত মুখোপাধ্যায় প্রশ্ন করেন, আপনারা সত্যিই বিবাহবিচ্ছেদ চান? জবাবে বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘আমি বিবাহবিচ্ছেদের পক্ষে। আর এই কারণটি আমার ব্যক্তিগত।’ তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী বলেন, ‘আমিও মিউচুয়াল ডিভোর্স চাই। কারণ জোর করে তো কারও সঙ্গে থাকা সম্ভব নয়। তবে আমার কোনও দাবি–দাওয়া নেই।’ আদালত সূত্রে এমন খবরই মিলেছে।
উল্লেখ্য, বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ ২০১৬ সালের ১ জুলাই সুজাতা মণ্ডলকে বিয়ে করেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হন সৌমিত্র। আদালতের নির্দেশে নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রে প্রচারে যেতে পারেননি এই বিজেপি সাংসদ। তখন তাঁর হয়ে প্রচার করে ঝড় তোলেন স্ত্রী সুজাতা। স্ত্রী সুজাতার প্রচারেই ওই লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হন সৌমিত্র। কিন্তু পরবর্তী সময়ে উভয়ের মধ্যে শুরু হয় সম্পর্কের টানাপোড়েন। অবশেষে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হন সুজাতা। তখন থেকে সম্পর্ক ভাঙনের দিকে এগোচ্ছিলেন তাঁরা।