নবান্ন চলো আন্দোলনের সময় আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া নিয়ে ছিল বৃহস্পতিবারের বিতর্ক। শুক্রবার ভাইরাল হল অভিযুক্ত বলবিন্দরের গ্রেফতার হওয়ার মুহূর্ত, যখন ধ্বস্তাধ্বস্তিতে পাগড়ি খুলে যায় তার। ক্ষুব্ধ হন শিখ সম্প্রদায়ের অনেকে। স্বভাবতই ঘটনা নিয়ে সুর চড়ায় বিজেপি। শুক্রবার রাতে এই প্রসঙ্গে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ।
বিজেপির অভিযোগ বলবিন্দর সিংকে যেভাবে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ ও তার পাগড়ি ধরে টান দেওয়া হয়েছে, তাতে শিখ ধর্মালম্বীদের অপমান করা হয়েছে। প্রসঙ্গত বন্দুক সহ হাওড়ায় বিক্ষোভরত বিজেপি কর্মীদের মধ্যে থেকে বলবিন্দরকে উদ্ধার করে পুলিশ। বিজেপির দিল্লি শাখার সচিব ইমপ্রিত সিং বক্সীর টুইট করা ভিডিও মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের উদ্দেশ্যে টুইট করেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার হরভজন সিং।
বিজেপি নেতা অরবিন্দ মেনন ও অন্যান্য নেতারা ওই ভিডিও টুইট করেন। একটি ধর্মের মানুষ ছাড়া বাকিদের কি রাজ্যে কোনও সম্মান নেই, সেই প্রশ্ন করেন অরবিন্দ মেনন। এদিন মধ্য কলকাতায় শিখ সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ নীরবে বিক্ষোভ করেন।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে তিনজন পুলিশ মিলে বলবিন্দরকে ধরার চেষ্টা করছে। সেই করতে গিয়েই পাগড়ি খুলে যায় এই ব্যক্তির। ভারতীয় অস্ত্র আইনের আওতায় বলবিন্দরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে কারণ তার পিস্তলের লাইসেন্স রাজৌরির, বাংলায় সেটা গ্রাহ্য নয়। শুক্রবারে হাওড়া আদালতে তোলা হয় বলবিন্দরকে। আপাতত তাকে হাজতেই থাকতে হবে বলে জানায় আদালত।
শুক্রবার রাতে রাজ্য পুলিশের তরফ থেকে ঘটনার ফুটেজ টুইট করে দাবি করা হয় যে ধ্বস্তাধ্বস্তিতে নিজের থেকে পাগড়ি খুলে গিয়েছিল। কোনও পুলিশ অফিসার সেটি করে নি। কোনও ধর্মের ভাবাবাগকে আহত করা পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের উদ্দেশ্য নয় বলে জানানো হয়েছে।
আরেকটি টুইটে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে যে তারা সব ধর্মকে সম্মান করেন। অ্যারেস্ট করার আগে বলবিন্দরকে পাগড়ি পরে নিতে বলা হয়েছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। প্রমাণস্বরূপ পুলিশ ভ্যানের পাশে পাগড়ি পরিহিত বলবিন্দরের ছবি জুড়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে যে থানায় নিয়ে যাওয়ার আগের ছবি এটি। রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তারা বদ্ধপরিকর বলে রাজ্য পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন যে বলবিন্দর বিজেপি যুব মোর্চার এক নেতার দেহরক্ষী। বেসরকারি নিরাপত্তরক্ষী বলবিন্দরের পিস্তলটির বৈধ লাইসেন্স আছে বলে তিনি জানান।
পাগড়ি ইস্যুতে বিজেপি নোংরা রাজনীতি করছে বলে দাবি করেছেন প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ কুণাল ঘোষ। তৃণমূল মুখপাত্রের দাবি কেউ জোর করে পাগড়ি খুলে দেয়নি ধাক্কাধাক্কির ফলে এই কাণ্ড।
অন্যদিকে জোড়াসাঁকো থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে গিয়ে তাদের ধাক্কা মারা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিজেপি সাংসদ তেজস্বী সূর্য। তিনি ও বাংলার দুই সাংসদ থানায় গিয়েছিলেন তাদের কর্মীদের মারা হয়েছে সেই নিয়ে অভিযোগ লেখাতে। সেই সময় তাদের ধাক্কা মারা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই জন্য সংসদে পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস দেবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তেজস্বী সূর্য।