মন্ত্রিসভার একের পর এক বৈঠকে তাঁর অনুপস্থিতি নিয়ে যখন জল্পনা তুঙ্গে, তখন রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বৃহস্পতিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানায় এক জনসভায় রাজীববাবুকে সৎ মানুষ বলে রীতিমতো সার্টিফিকেট দিলেন তিনি। বললেন, দুর্নীতিতে জড়াতে চাননি বলে রাজীববাবুকে সেচ দফতর খোয়াতে হয়েছে।
এদিন স্বভাবসিদ্ধ কায়দায় দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূল সরকারকে একের পর এক বানে বিদ্ধ করে দিলীপবাবু। এরই মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় পাকা নদীবাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় কাঠগড়ায় তোলেন রাজ্য সরকারকে। দাবি করেন, তৃণমূল সরকারের দুর্নীতির জন্যই হয়নি পাকা নদীবাঁধ। এমনকী, সেই দুর্নীতিতে শরিক না হওয়ায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে সেচমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বলে দাবি করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার নামখানায় দিলীপবাবু বলেন, ‘সুন্দরবনের সমস্ত নদীবাঁধ পাকা হওয়ার কথা ছিল। ওই রাজীববাবু তখন সেচ মন্ত্রী ছিলেন। তিনি একটু ভাল লোক, ওসবের মধ্যে নেই। তিনি বাঁধ তৈরি করতে শুরু করলেন। ভাইয়েরা কাটমানি পেল না। তাঁর মন্ত্রিত্বটাই পালটে দিল। বনমন্ত্রী করে দিল। বলল, যা জঙ্গলে ঘোর এবার। সে উলটো পালটা বলেছে একটু, কী ক্ষেপে গেছে দিদি। জঙ্গলে গেলে তো মন খারাপ হবেই। ভাল কাজ করতে পারবেন না’।
গত কয়েকদিন ধরেই বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। তাঁর ছবি দিয়ে পোস্টার পড়েছে রাজ্যের বিভিন্ন অংশে। তাতে নেই তৃণমূলের প্রতীক। পোস্টার লাগানো হয়েছে ‘দাদার ভক্ত’-দের তরফে। এরই মধ্যে রাজীববাবুও নানা অরাজনৈতিক মঞ্চ থেকে একাধিক ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভ প্রশমণে ইতিমধ্যে ২ বার তাঁর সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর। তার পরও মন্ত্রিসভার বৈঠকে হাজির হননি রাজীববাবু। তবে দলের একটি অনুষ্ঠানে সম্প্রতি তাঁকে দেখা গিয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে।