সদ্য ভগবানপুরের জয়ী পঞ্চায়েত হাতছাড়া হয়েছিল বিজেপির। তাতে চাপ তৈরি হলেও মুখে কিছু বলেননি বিরোধী দলনেতা। এবার আবারও ওই ভগবানপুরের মাটিতে পদ্ম উপড়ে ফেলে দিল ঘাসফুল। আর এভাবেই শুভেন্দু অধিকারীর খাসতালুকে বিজেপির হাত থেকে সমবায় সমিতি ছিনিয়ে নিল তৃণমূল কংগ্রেস। যা নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার জোর চর্চা শুরু হয়েছে। ভগবানপুর ২ নম্বর ব্লকের জুখিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ইক্ষুপত্রিকা সমবায় সমিতির ১২টি ডেলিগেট আসনে বুধবার নির্বাচন ছিল। সেখানে মোট ৩২ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। মোট ভোটার ৮৩৯ জন। আর ভোট পড়েছে ৭৪৬টি। তাতে দেখা গেল, সবকটি আসনে জয়লাভ করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীরা। আর শুভেন্দু গড়েই গোহারা হল বিজেপি।
পদ্মফুল ফোটা যে পূর্ব মেদিনীপুরে ক্রমাগত কমছে সেটার উদাহরণ বারবার মিলেছে। আর এই ইক্ষুপত্রিকা সমবায় সমিতির সমবায় সমিতির সম্পাদক পদে ছিলেন কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সহ–সভাপতি তথা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি শশাঙ্কশেখর জানা। তিনি সম্প্রতি বিজেপিতে যোগদান করেন। এই ঘটনাকে ভাল চোখে দেখেননি ভোটাররা। আর তাই একটা ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল ভোটারদের মধ্যে। সেই ক্ষোভ থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের উপরই আস্থা রেখেছেন তাঁরা। তবে বিজেপি নানা চেষ্টা করেছিল এই সমবায় সমিতি জেতার জন্য। কিন্তু ভোটাররাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন বলে খবর।
আরও পড়ুন: ‘তুই মরলি না কেন?’ কোন্নগরে পরকীয়া প্রেমিককে রাস্তায় ফেলে মারধর করলেন বধূ
এই সমবায় সমিতি জেতার পর উল্লাসে ফেটে পড়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা। শীতে সবুজ আবির খেলেছেন অনেকে। তবে এই জয় নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ মানব পড়ুয়া বলেন, ‘মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের সঙ্গে আছেন সেটা আবার প্রমাণিত হল। ইক্ষুপত্রিকা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনেও ভোটাররা তৃণমূল কংগ্রেসকেই দু’হাত তুলে আশীর্বাদ করেছেন। যাঁরা তৃণমূল কংগ্রেস থেকে সমস্ত সুযোগ–সুবিধা নিয়ে দলবদল করেছেন তাঁদের মানুষ সমর্থন করেননি। তাঁদের উদ্দেশ্য সফল হতে দেননি সাধারণ মানুষ। এই ফলাফলের জন্য তাঁদের ধন্যবাদ জানাই।’
যদিও এই পরাজয় নিয়ে সাফাই দিয়েছে জেলা বিজেপি। এখনও তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছে বিজেপি। এই বিষয়ে কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রশেখর মণ্ডলের বক্তব্য, ‘আমরা আগে থেকে বারবার বলে আসছি, সমবায় সমিতির ভোটকে দেখিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস মানুষের কাছে জায়গা পাওয়ার চেষ্টা করছে। কারণ এই দুর্নীতিগ্রস্ত দলকে বহু আগে থেকেই মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছেন। সমবায় নির্বাচন তো প্রতীকে হয় না। তাই এখানে রাজনৈতিক দলের নাম ব্যবহার করা হয় না। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস দেখাতে চাইছে, মানুষ এখনও তাদের সঙ্গে রয়েছে। আসলে তৃণমূল কংগ্রেসের পায়ের তলার মাটি আলগা হয়ে গিয়েছে।’