শটগানের গুলি বা ছবরার আঘাতে মৃত্যু হয়েছে বিজেপি কর্মী উলেন রায়ের। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট উল্লেখ করে এমনই দাবি করল রাজ্য পুলিশ। একইসঙ্গে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্য পুলিশ এরকম বন্দুক ব্যবহার করে না। মিছিল থেকেই আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্তভার সিআইডির হাতেও তুলে দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে রাজ্য পুলিশের তরফে টুইটারে বলা হয়, ‘ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, শটগানের আঘাতের কারণে মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ শটগান ব্যবহার করে না। এটা স্পষ্ট যে গতকাল শিলিগুড়িতে বিক্ষোভের সময় সশস্ত্র লোকজনদের নিয়ে আসা হয়েছিল এবং তারা আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি চালিয়েছে।’
সোমবার বিজেপির উত্তরকন্যা অভিযানে গিয়ে মৃত্যু হয় উলেনের। বিজেপির তরফে অভিযোগ করা হয়, গুলি চালিয়েছে পুলিশ। কিন্তু সেই দাবি উড়িয়ে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট পেয়ে পুলিশ জানিয়েছে, খুব কাছ থেকে গুলি চালানো হয়েছে। টুইটে বলা হয়েছে, ‘বিক্ষোভ কর্মসূচিতে মৃতের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা কোনও ব্যক্তি খুব কাছ থেকে গুলি চালিয়েছিল। যা অভূতপূর্ব। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সশস্ত্র লোকজন নিয়ে আসা এবং গুলি চালানোর জন্য তাদের উস্কানি দেওয়ার কথা শোনা যায়নি।’
যদিও বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, কিছু ‘লুকানোর’ জন্য রাতে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের দাবি তুলে উলেনের দেহ নিতেও অস্বীকার করেন বিজেপি নেতারা। তাঁদের দাবি, সেই ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি করতে হবে। থাকতে হবে তিন চিকিৎসকের দল। একইসঙ্গে ময়নাতদন্তের সময় বিজেপি নেতাদেরও থাকতে দেওয়ার দাবি তোলা হয়েছে। চিঠি দেওয়া হয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে। যদিও মেডিক্যাল কলেজের তরফে সেই চিঠির এখনও প্রাপ্তিস্বীকার করা হয়নি।
বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলেন, ‘রিপোর্ট থেকে আমাদের অভিযোগ প্রমাণিত হচ্ছে যে পুলিশ আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে ছিল এবং উলেনকে তারাই গুলি করেছে। আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তা হাস্যকর। কারণ পুলিশের ব্যারিকেডের দিকে যাওয়ার সময় উলেনের বুকে গুলি লেগেছে। যদি মিছিলের কেউ তাঁকে গুলি করত, তাহলে পিছনে গুলি লাগত।’
যদিও রাজ্য পুলিশের পাশে দাঁড়িয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। সাংসদ এবং দলের মুখপাত্র সৌগত রায় বলেছেন, ‘পুলিশ জানিয়েছে যে তারা শটগান ব্যবহার করেনি। যা থেকে ছরবা ছোড়া হয়। সত্য উদঘাটন করবে সিআইডি। বিজেপি চাইছে বলেই দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করা যেতে পারে না। তাতে বিচারবিভাগীয় আদেশ লাগে। বিজেপি চাইলে অবশ্যই আদালতে যেতে পারে।’