কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে শুভেন্দু অধিকারীকে সরিয়ে দেওয়া হল। মঙ্গলবার একটি জরুরি বৈঠকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাঙ্কের পরিচালন কমিটি। যদিও শুভেন্দুর অনুগামীদের দাবি, নিয়মবর্হিভূতভাবে বৈঠক ডাকা হয়েছে। স্বভাবতই অপসারণের পুরো প্রক্রিয়ায় অবৈধ।
২০০৯ সাল থেকে কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান পদে ছিলেন শুভেন্দু। বোর্ডের সদস্যরা জানিয়েছেন, চেয়ারম্যান পদে কেউ তিনবারের বেশি থাকতে পারেন না। প্রতিটি দফার মেয়াদ তিন বছর হয়। সেইমতো ২০১৮ সাল থেকেই চেয়ারম্যান পদ ছেড়ে দেওয়ার কথা শুভেন্দুর। সেটা অবশ্য হয়নি। তবে গত বছর ডিসেম্বরে শুভেন্দু বিজেপিতে যাওয়ার পরই তৎপরতা শুরু হয়। বিষয়টি আদালতেও গড়ায়।
চলতি মাসের শুরুতে কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের মামলায় সাময়িক স্বস্তি পেয়েছিলেন শুভেন্দু। তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তার আনার জন্য যে বৈঠক ডাকা হয়েছিল, তা খারিজ করে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি শম্পা সরকার জানিয়েছিলেন, যে বৈঠক ডাকা হয়েছে, তাতে পদ্ধতিগত ত্রুটি আছে। চেয়ারম্যানকে সরানোর জন্য এভাবে বৈঠক ডাকার নিয়ম নেই। উপযুক্ত কারণ জানাতে হয়। প্রমাণ থাকার যে প্রয়োজনীয়তা আছে, সেই সংক্রান্ত নিয়মও মানা হয়নি বলে জানান বিচারপতি। সেই পরিস্থিতিতে বৈঠক বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট।
তারইমধ্যে মঙ্গলবার জরুরি ভিত্তিতে বৈঠকে বসে কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের পরিচালন কমিটি। সেখানে যে ১৪ জন ডিরেক্টরের ভোটাধিকার আছেন, তাঁদের মধ্যে ১০ জনই শুভেন্দুকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণের পক্ষে মত দেন। পরিচালন কমিটির তরফে দাবি করা হয়, শুভেন্দু দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত থাকছিলেন। তার জেরে ব্যাহত হচ্ছিল ব্যাঙ্কের স্বাভাবিক কাজকর্ম।
সেই অপসারণ নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। শুভেন্দু শিবিরের বক্তব্য, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া নিয়ম মোতাবেক আগেভাগেই জরুরি বৈঠক বাতিলের চিঠি পাঠানো হয়েছিল। তাই মঙ্গলবারে বৈঠক কোনওভাবেই বৈধ নয়। অন্যদিকে, তৃণমূল শিবিরের দাবি, আগেও বৈঠক ডাকা হয়েছিল। তা নিয়ে আদালতে দায়ের হয়েছিল মামলা। পরে বৈঠক ডাকার অনুমতি দিয়েছে আদালত।