কল্যাণীর ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকার বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ। তার জেরে কমপক্ষে চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে খবর মিলেছে। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়েছিল আগুনে ঝলসে যাওয়া দেহ। সেইসঙ্গে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় একজনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁকে ভরতি করা হয়েছে কল্যাণীর জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে। বিষয়টি নিয়ে আপাতত জেলা প্রশাসন, পুলিশ বা দমকল বাহিনীর তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। এখন আগুন নেভানোর কাজ চলছে। ঘটনাস্থলে যেরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের পরে প্রশ্নের মুখে প্রশাসন
আর তারপরই প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের নজরদারি নিয়ে। কারণ কল্যাণীর রথতলার যে বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটেছে, সেখান থেকে কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের দূরত্ব বেশি নয়। কল্যাণীর প্রবেশদ্বারও বলা যায়। সেরকম একটা জায়গায় কীভাবে বাজি কারখানা গড়ে উঠল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
২০২৩-তে এগরার বিস্ফোরণ ‘চোখ খুলে দিয়েছিল’ রাজ্যের, তারপর…
কারণ গত কয়েক বছরে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এরকম একের পর এক বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। ২০২৩ সালে মে'তে পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার খাদিকুলে বেআইনি বাজি কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘(এগরার) ঘটনায় আমাদের চোখ খুলে গিয়েছে। আমরা ঠিক করেছি যে আগামী দু'মাসের মধ্যে আমার কাছে একটি রিপোর্ট আসবে। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে আমরা একটি কমিটি তৈরি করেছি, (সেই কমিটি রিপোর্ট জমা দেবে)।’
আরও পড়ুন: আম্বানির ১ লাখ কোটি টাকা থেকে হোটেল, ডেটা সেন্টার- আজ কী প্রতিশ্রুতি পেল বাংলা?
সেইসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, 'আমি স্থানীয় মানুষকে বলব যে আপনারাও লক্ষ্য রাখুন। যদি কোনও বেআইনি বাজি কারখানায় আতসবাজি তৈরি হয়, সঙ্গে সঙ্গে ওসিকে রিপোর্ট করবেন। যদি সেই ওসি অ্যাকশন না নেন, তাহলে আমার উপর ছেড়ে দেবেন। আমি ওসিকে দু'দিনে চেঞ্জ করে দেব। এখানকার ওসিও চেঞ্জ হয়ে গিয়েছেন। নতুন ওসি এসেছেন। কারণ তাঁকে বলা সত্ত্বেও অ্যাকশন নেননি। আমি শুনেছি এটা। সঠিক সময় ইন্টেলিজেন্স কাজ করলে এই ঘটনা ঘটত না।'
কল্যাণীতে বিস্ফোরণের তীব্রতা ভয়াবহ
মুখ্যমন্ত্রীর সেই বার্তার পরও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ ঘটেছে। যে তালিকায় আজ কল্যাণীর নামও জুড়ে গেল। পুরো ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। শুক্রবার দুপুরে যে বিস্ফোরণ হয়েছে, সেটার তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে বাজি কারখানার টিনের চাল উড়ে গিয়েছে। পুরো কারখানা কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সঙ্গে দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে আগুন। প্রাথমিকভাবে টিউবওয়েল থেকে জল নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারইমধ্যে ঘটনাস্থলে চলে আসে পুলিশ ও দমকল। চলছে উদ্ধারকাজ।