মহিলার জীবনে নেমে এসেছিল পক্ষাঘাত। আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হওয়ার। হঠাৎই দুয়ারে কড়া নাড়লেন মহকুমাশাসক! অবাক মহিলা। কারণ তাঁর বাড়িতে গিয়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড তৈরি করে দিলেন খোদ মহকুমাশাসক। প্রশাসনের এই মানবিক মুখ দেখল পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সারদা পল্লি এলাকার সরকার পরিবার। এখানে রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসক প্রিয়দর্শিনী ভট্টাচার্য নিজে মৃণালকান্তি সরকারের বাড়িতে গিয়ে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করে দিলেন। দুয়ারে পেলেন পরিষেবা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃণালকান্তি সরকারের স্ত্রী পারুল সরকার কয়েক বছর ধরে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত। হাঁটা–চলা করতে পারেন না তিনি। তাই স্ত্রীর স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করাতে গিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন মৃণালকান্তিবাবু। নিয়ম অনুযায়ী, স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের জন্য বাড়ির সকল সদস্যের ছবি তুলতে হয়। কিন্তু স্ত্রী তো পক্ষাঘাতে আক্রান্ত। তাঁকে কীভাবে ছবি তুলতে নিয়ে যাবেন? এই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল মৃণালবাবুর মাথায়। অবশেষে তিনি রঘুনাথপুরের মহকুমাশাসক প্রিয়দর্শিনী ভট্টাচার্যের দ্বারস্থ হন। তাঁকে সমস্যাটা জানান। তারপরই মৃণালবাবুর বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হন খোদ মহকুমাশাসক প্রিয়দর্শিনী ভট্টাচার্য। ব্যস, পারুল সরকারের স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড তৈরি হয়ে গেল।
এই ঘটনায় অভিভূত মৃণালকান্তিবাবু বলেন, ‘আমার স্ত্রী অসুস্থ। তাই স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড তৈরির জন্য মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে গিয়েছিলাম। মহকুমাশাসক যে নিজে বাড়িতে এসে কার্ডটি তৈরি করে দেবেন, তা ভাবতেও পারিনি।’ আর মহকুমাশাসক প্রিয়দর্শিনী ভট্টাচার্য বলেন, ‘পারুলদেবীর শারীরিক অক্ষমতার কথা জানতে পেরে আমরা ওনার বাড়িতে এসে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড তৈরি করে দেওয়ার মনস্থির করি। শুধু ছবি তোলা নয়, একেবারে হাতে-হাতে ওঁনাদের হাতে স্বাস্থ্যসাথীর কার্ডটিও তুলে দিয়েছি। আমি চাই উনি ঠিকমত মেডিক্লেমের সুযোগ পান। চিকিৎসা করিয়ে উনি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন। সেই প্রার্থনা করছি।’ গোটা পরিবারের চোখে জল নেমে এলো দুয়ারে এই পরিষেবা পেয়ে।