বন্ধ ঘরের মধ্যে মা ও মাস তিনেকের শিশুর দেহ উদ্ধার ঘিরে রহস্যের দানা বাঁধল মুর্শিদাবাদের ডোমকলে। প্রাথমিকভাবে অনুমান, পুত্র সন্তানকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন মা। মাস তিনেকের শিশুকে প্রথমে শ্বাসরোধ করে খুন করেন বধূ তারপর নিজে আত্মঘাতী হন। কেন ওই বধূ নিজের শিশুপুত্রকে খুন করে আত্মঘাতী হলেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। মৃতের শ্বশুরবাড়ির দাবি, সন্তান জন্ম হওয়ার পর থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন ওই বধূ। তবে ঘটনার তদন্ত করে শ্বশুরবাড়ির দাবি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
সোমবার সকালে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের ডোমকলের জোতকানাই মাঠপাড়ায়। খবর দেওয়া হলে পুলিশ এসে মা ও শিশুর নিথর দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ওই বধূর নাম তানিয়া বিবি (২২) ও সাড়ে তিন মাসের মৃত শিশুটির নাম আবু রাইহান খন্দকার। সাগরপাড়া নটিয়ালে মৃতার পৈতৃক বাড়ি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সাগরপাড়ার নটিয়ালের বাসিন্দা তানিয়ার সঙ্গে বছর দেড়েক আগে জোতকানাইয়ের কৃষিজীবী যুবক সোহেল খন্দেকারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই ওই বধূ অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। সন্তান হওয়ার পর সমস্যা আরও বাড়ে। কিন্তু কেন, তা এখনও অজানা। প্রতিবেশীদের দাবি, স্বামীর সঙ্গেও কোনও অশান্তি ছিল না তানিয়ার। তবে কেন অবসাদ গ্রাস করল তাঁকে? কেন এই নির্মম পরিণতি হল, তা এখনও রহস্য।
পরিবারের সদস্যদের দাবি, শিশুটির জন্মানোর পর থেকেই মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছিলেন তানিয়া বিবি। তাঁর বাবা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে মেয়ের চিকিৎসাও করান। পরে আবার তানিয়াকে শ্বশুর বাড়ি পাঠিয়ে দেন। শাশুড়ি আকতারা বিবির অভিযোগ, তাঁর পুত্রবধূ সুস্থ ছিলেন না। চিকিৎসা করার পর ফিরে আসলেও উলটপালটা কাজ করতেন। ছেলেকে বিছানার নিচে রেখে তাকে খুঁজে বেড়াতেন।
পরিবারের দাবি, সকালে ছেলেকে নিয়ে নিজের ঘরেই ছিলেন তানিয়া। ওদিকে শাশুড়ি রান্না করছিলেন। বেলার দিকে তানিয়ার স্বামী মাঠ থেকে ফিরে আসেন। এসে ঘরে ঢুকতে গিয়ে দেখেন ভিতর দিক থেকে ঘরের দরজা বন্ধ। ডাকাডাকি করেও তানিয়ার কোনও সাড়া না পেয়ে দরজায় ধাক্কা দিতে থাকেন তিনি। এরপর তারা জানালা দিয়ে তানিয়ার দেহ ঝুলতে দেখেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ডোমকল থানার পুলিশ।