ভোটের পরের হিংসা অব্যাহত। রণক্ষেত্রের চেহারা নিল কাঁথি। তৃণমূলের দলীয় কার্য়ালয় লক্ষ্য করে মুড়ি মুড়কির মতো বোমাবাজি করা হল। চলল গুলিও। কাঠগড়ায় বিজেপি। এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে এক তৃণমূল কর্মী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর ২ নম্বর ব্লকের এক্তারপুরে। ঘটনা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে গোটা এলাকা। ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে।
তৃণমূলের অভিযোগ, ভোটে আমাদের বিপুল জয় মেনে নিতে না পেরে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা চালাচ্ছে বিজেপি। যদিও তৃণমূলের দাবি উড়িয়ে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। তাদের পাল্টা দাবি, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে। এদিকে, ওই এলাকায় আর যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য গোটা এলাকায় বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কাঁথি থানার পুলিশ। যদিও এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ওই দলীয় কার্যালয়ে বেশ কয়েকজন তৃণমূল কর্মীরা বসেছিলেন। অভিযোগ উঠে, বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী বাইকে ওই পার্টি অফিসের সামনে এসে দাঁড়ায়। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই তারা পার্টি অফিস লক্ষ্য করে বোমা ছুঁড়তে শুরু করে। পার্টি অফিসের বাইরে পর পর বোমা পড়তে শুরু করায়, স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করে দেন। সঙ্গে সঙ্গে এলাকা ফাঁকা হয়ে যায়। এদিকে দুষ্কৃতীরা গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে পার্টি অফিসের দিকে এগিয়ে যায়। সেই সময় দ্বারকেশ দাস নামে এক তৃণমূল কর্মী পালাতে গিয়ে ওই অফিসের দরজার সামনে চলে আসে। সেই সময় দুষ্কৃতীদের ছোঁড়া গুলি ছিটকে তাঁর কোমরে গিয়ে লাগে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন দ্বারকেশবাবু। অন্যান্য তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা অফিসের দরজা ভেতর থেকে লাগিয়ে দেওয়ায়, অল্পের জোরে প্রাণে বাঁচেন তাঁরা। ঘটনার পরই এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা।
গুরুতর আহত ওই কর্মীকে উদ্ধার করে প্রথমে মুগবেড়িয়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভরতি করা হয়। তবে শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায়, সেখান থেকে তমলুক জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কিন্তু সেখানেও তাঁর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে। তার পরই গভীর রাতে জখম দ্বারকেশকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে এনে ভরতি করা হয়। আপাতত সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।