কাঁটাতার পেরিয়ে অবৈধ পথে ভারতে ঢুকে পড়ে বাংলাদেশের তিনজন নাগরিক। কারণ ওখানে এখন অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। আর বেআইনি অনুপ্রবেশের অভিযোগে তিন বাংলাদেশি হিন্দু নাগরিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ থেকে তাঁদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই তিনজন বুধবার বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেছিল। তারপর এখানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখান থেকে তিন বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। আজ, বৃহস্পতিবার ধৃতদের বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। এই ঘটনায় এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
এদিকে ইসকনের হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারের ঘটনায় পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়েছে ওপার বাংলায়। হিন্দুদের উপর নির্মম অত্যাচার বাড়ছে বাংলাদেশে বলে অভিযোগ। এই আবহে বুধবার চোরাপথ ধরে বনগাঁয় পালিয়ে আসে এক দম্পত্তি ও তাঁদের ভাগ্নে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের নাম গীতা মণ্ডল, ভবসিন্ধু মণ্ডল এবং তাঁদের ভাগ্নে সুদীপ মণ্ডল। এঁরা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের বাসিন্দা। ভবসিন্ধুবাবুর মেয়ের বাংলায় বিয়ে হয়েছে। তাঁর নাম বর্ণা মণ্ডল। বর্ণা মণ্ডল বলেন, ‘বাংলাদেশের পরিস্থিতি খুব খারাপ। তাই বাবা–মা বাধ্য হয়ে ভারতে চলে এসেছেন। এখানে এসে বনগাঁয় আশ্রয় নেন তাঁরা।’
আরও পড়ুন: আরজি কর হাসপাতালে এবার অগ্নিকাণ্ড, অ্যাকাডেমি বিল্ডিংয়ে আগুন লাগায় আতঙ্ক
অন্যদিকে বর্ণা মণ্ডলের বিয়ে হয়েছে শ্রীরামপুরে। সেখানেই থাকেন তিনি। এই তিনজন অনুপ্রবেশকারী যাঁর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন সেই খোকন বিশ্বাসের বক্তব্য, ‘ওপার বাংলায় হিন্দুদের উপর মারাত্মক অত্যাচার শুরু হয়েছে। বেছে বেছে শুধু হিন্দুদের উপর অত্যাচার চালানো হচ্ছে। এঁরা ভয়ে এক ভাগ্নেকে সঙ্গে নিয়ে এপারে চলে আসেন। সেটা জানতে পেরে পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়েছে।’ ইসকন মন্দিরের সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাস গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে। নানা জায়গায় হিন্দুদের ওপর আক্রমণের ঘটনা ঘটছে। গতকাল সিলেটে একটি মন্দির ভাঙচুর করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
এছাড়া বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, ‘দেশের অস্থির এলাকায় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’ যদিও ইসকনের সাধু এবং ভক্তরা অনেক জায়গাতে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে খবর আসছে। অন্তর্বর্তী মহম্মদ ইউনুসের সরকার অবশ্য দেশজুড়ে চলা অরাজক পরিস্থিতি দেখেও কোনও পদক্ষেপ করছে না বলে অভিযোগ। এত ঘটনা ঘটে গেলেও অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে শুধু বলা হচ্ছে, ‘পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে’।