নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তীকে ‘পরাক্রম দিবস’ বলে ঘোষণা করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। আর তাতেই বেজায় চটেছে বাংলার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে বসু পরিবারের অনেকেই। আগামী ২৩ জানুয়ারি তারিখকে পরাক্রম দিবস ঘোষণা করে দেওয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস এবং বাম দলগুলি একযোগে বিরোধিতা করতে শুরু করেছেন।
নেতাজি পরিবারের দাবি, এই নাম প্রস্তাব করা হয়নি। নেতাজির তৈরি করা দল ফরওয়ার্ড ব্লক এই নাম প্রস্তাব করেনি। শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস এই নাম প্রস্তাব করেনি। তাহলে এই নাম কারা প্রস্তাব করল? এই খবরটি প্রথম টুইট করে জানান বিজেপির আইটি সেলের প্রধান তথা রাজ্যের কো– ইনচার্জ অমিত মালব্য। এমনকী এই দিনটিকে পরাক্রম দিবস হিসেবে ঘোষণা করায় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠছে, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা না করেই মোদী সরকার সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে?
এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বছরের পর বছর দাবি করে আসছেন, ২৩ জানুয়ারিকে জাতীয় ছুটি ঘোষণা করা হোক। একইসঙ্গে দিনটিকে দেশনায়ক দিবস হিসেবে পালন করা হোক। এটাই উপযুক্ত নাম। কারণ স্বয়ং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে দেশনায়ক বলে ডেকেছিলেন। কিন্তু মোদী সরকার একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
গোটা বাংলায় এখন এই নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। বিজেপি নেতা তথা নেতাজির প্রপৌত্র চন্দ্রকুমার বসু বলেন, ‘এই দিনটিকে অবশ্যই দেশপ্রেম দিবস হিসেবে পালন করা উচিত।’ এক্ষেত্রে কেন্দ্রের সঙ্গে তিনি সহমত পোষণ করলেন না বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। একই দাবি তুলে সোচ্চার হয়েছেন নেতাজির দল ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘এই দিনটিকে দেশপ্রেম দিবস হিসেবে পালন করা উচিত। বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় থাকতে বারবার এই দাবি তুলেছিল। কিন্তু কেন্দ্র তাতে সাড়া দেয়নি। মানুষের আবেগ তারা বোঝে না।’
উল্লেখ্য ২০১০ সালে সিপিআইএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে চিঠি লিখে এই দিনটিকে দেশপ্রেম দিবস হিসাবে ঘোষণা করার অনুরোধ করেছিলেন। এই বিষয়ে বিজেপির সহ–সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ‘গোটা জাতির কাছে দেশাত্মবোধের প্রতীক করে তুলতেই কেন্দ্রীয় সরকার পরাক্রম দিবসের ঘোষণা করেছেন।’