বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং মহম্মদ ইউনুসের সরকার গঠনের পর থেকে ভারতে নাকি একজনও বাংলাদেশি বেআইনি ভাবে অনুপ্রবেশ করেনি। এমনই দাবি করল বিএসএফ। উল্লেখ্য, হাসিনার সরকরের পতনের পর ভারতের বিভিন্ন সীমান্তে ভিড় করতে দেখা গিয়েছিল বাংলাদেশি সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজনকে। এছাড়াও অনেক আওয়ামি লিগ সমর্থক বা নেতা-কর্মীরাও বাংলাদেশ ছাড়তে উদ্যত হয়েছিলেন। তবে তাঁদের কেউই বেআইনি ভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করতে সক্ষম হয়নি বলেই দাবি করল বিএসএফ। শুধু তাই নয়, এই ক্ষেত্রে নাকি বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড বা বিজিবি নাকি সাহায্য করেছে ভারতকে। (আরও পড়ুন: ভারতকে 'অস্থিতিশীল করার' চেষ্টায় আছে আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্ট: বিজেপি)
আরও পড়ুন: ধার নিল, প্রাণও নিল! বাংলাদেশে হিন্দু মহিলাকে কুপিয়ে খুন, অভিযুক্ত প্রতিবেশী
বিএসএফ প্রধান দলজিৎ সিং চৌধুরী বলেন, '৫ অগস্টের পর বাংলাদেশ থেকে যারাই ভারতে এসেছে, তারা বৈধ ভিসা নিয়েই সীমান্ত পার করেছে। প্রাথমিক ভাবে সীমান্তে অনেকেই ভিড় করেছিল বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করার জন্যে। তবে বিএসএফের তৎপরতা এবং বিজিবির সঙ্গে আমাদের বোঝাপড়ার জন্যেই কোনও অবৈধ অনুপ্রবেশ ঘটেনি।' উল্লেখ্য, এই বছরে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ১১ হাজার ৮৬৬ কেজি মাদক উদ্ধার হয়েছে। ১৪টি অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। ২২ পাচারকারীকে খতম করা হয়েছে। এবং ৪১৬৮ জন পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও সীমান্তে পাচারের সময় উদ্ধার হয়েছে ১৩০০ কোটি মূল্যের ১৭৩ কেজি সোনা এবং ১৭৯ কেজি রুপো। (আরও পড়ুন: ইউনুসের সঙ্গে বৈঠকের পরই চিন্ময় প্রভুর হয়ে সরব বাংলাদেশের ফাদার রোজারিও, বললেন…)
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামের বিশ্ববিদ্যালয়ের হিন্দু উপাচার্যের পদত্যাগ, বিপ্লবের নামে অত্যাচার?
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে অস্থিরতার পর থেকে সীমান্তে আরও কড়া হয়েছে বিএসএফ। কার্যত মাছি গলার উপায় নেই। এদিকে এসবের মধ্যেই সম্প্রতি জলপাইগুড়ির বেরুবাড়ি গ্রামের কাছে প্রবেশের চেষ্টা করছিল পাচারকারীরা। সেই সময় বিএসএফের গুলিতে মৃত্যু হয় এক ব্যক্তির। তার নাম মহম্মদ আনোয়ার বা আনোয়ার হক। ৩৫ বছর বয়সি ওই ব্যক্তি বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার বাসিন্দা বলে প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে। রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে, গভীর রাতে সীমান্ত পথে গরু পাচার হচ্ছিল। আসলে শীতকালে কুয়াশার সুযোগ নেয় পাচারকারীরা। অন্তত ১৫-২০টি গরু সীমান্ত দিয়ে গরু পাচার করা হচ্ছিল। অন্তত ২০ জন পাচারকারী এলাকায় ছিল। বিএসএফ সীমান্তে ওই পাচারকারীদের দেখতে পেয়েই চ্যালেঞ্জ করে বাহিনী। তাদের তাড়া করেন জওয়ানরা। এদিকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে জওয়ানদের উপর হামলার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ। হামলার জেরে এক বিএসএফ জওয়ান আহত হন। জওয়ানরা পালটা গুলি চালান। এক পাচারকারীর গুলি লাগে। তার নাম মহম্মদ আনোয়ার। সেই অবস্থায় সে সীমান্তের দিকে ছুটতে থাকে। এরপর সে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে বলেও খবর। ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের ৭৫১ বর্ডার পিলারের কাছে এই ঘটনা হয়েছে বলে খবর। (আরও পড়ুন: এমন সব ইস্যু… ভারতের চিন্তায় 'ঘুম উড়ল' বাংলাদেশের! স্মারকলিপি ভারতীয় হাইকমিশনে)
এদিকে সম্প্রতি আবার বেআইনি অনুপ্রবেশের অভিযোগে তিন বাংলাদেশি হিন্দু নাগরিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ থেকে তাঁদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এই তিনজন বুধবার বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করেছিল। তারপর এখানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেন। সেখান থেকে তিন বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ধৃতদের বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হলে বিচারক পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।