বড়দিনের প্রাক্কালে এক যৌনকর্মীর রহস্যমৃত্যুতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে কালনায়। কারণ ওই যৌনকর্মী ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। সেখানে আসত নানা খদ্দের। তাই এই রহস্যমৃত্যুর নেপথ্যে কারও হাত আছে কিনা তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। সোমবার ওই ভাড়াবাড়ির ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে যৌনকর্মীর দেহ। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচণ্ড অ্যাকটিভ থাকতেন ওই যুবতী যৌনকর্মী। তবে এই সোশ্যাল মিডিয়া সূত্রেই তাঁর জীবনে প্রেম আসে। সেই প্রেমই পরিণতি পায় বিয়েতে। এটা যৌনকর্মী হিসাবে পেশায় আসার আগের ঘটনা।
বিয়ে করে সংসার ভালই চলছিল বলে পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে। তবে হঠাৎ সেই সংসার থেকে সরাসরি দেহব্যবসায় নেমে পড়েন ওই যুবতী বধূ। পেশা হয়ে ওঠে যৌনকর্মীর। তারপর কয়েকমাস কাটতেই তাঁর মৃত্যু হল। আর তাতেই এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে কালনায়। এই ঘটনার পর ইতিমধ্যেই ওই যৌনকর্মীর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে দিয়েছে পুলিশ। রহস্যের পর্দাফাঁস করতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। মৃত যৌনকর্মীর স্বামীর ভূমিকা এখন খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে জামাইয়ের সঙ্গে মেয়ের সম্পর্ক আদৌ ঠিক ছিল কিনা তা নিয়ে পুরোপুরি অন্ধকারে মৃতার পরিবার।
আরও পড়ুন: সুন্দরবন এলাকায় ‘ট্রানজিট ক্যাম্প’ তৈরি করেছে লস্কর–ই–তৈবা, রাজ্যকে তথ্য কাশ্মীর পুলিশের
পুলিশ সূত্রে খবর, পূর্ব বর্ধমানের কালনার বাসিন্দা ছিলেন ওই যুবতী। তিন বছর আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিহারের এক যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় ওই যুবতীর। তারপর সম্পর্ক এগিয়ে চলে টানটান গতিতে। ঘোরা, বেড়ানো থেকে শুরু করে একান্তে সময় কাটানো সবই চলছিল। কিন্তু পরিবারকে সেটা জানালে ওই সম্পর্ক তাঁরা মানেনি। তখন বাড়ির অমতেই বিয়ে করেন তাঁরা। আর বাড়িতে যুবতী জানিয়ে দেন, তাঁরা ভাল আছে। কিন্তু বিয়ের কয়েকমাস পরই কালনা শহরের কদমতলা এলাকায় ঘর ভাড়া নেন ওই যুবতী বধূ। শুরু হয় দেহব্যবসা। সোমবার ওই ঘর থেকেই উদ্ধার হয় যুবতীর ঝুলন্ত দেহ। তখন খবর দেওয়া হয় থানায়।
কিন্তু বিয়ের পর কেন দেহব্যবসা শুরু করলেন যুবতী বধূ? এই পেশায় কি তাঁর স্বামী তাঁকে নামিয়ে ছিলেন? প্রেম করে বিয়ের পর কি ঠকে গিয়েছিলেন? স্বামী কি আসলে দালাল? এইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ। মৃতা যুবতী বধূর বাবা বলেন, ‘বিহারের একটি ছেলের সঙ্গে ফেসবুকে মেয়ের পরিচয় হয়। তারপরই সেই প্রণয় থেকে ওই ছেলেটিকে বিয়ে করে মেয়ে। তিন বছর আগে বিয়ে হয় মেয়ের। যদিও সেই বিয়ে আমরা মেনে নিতে পারিনি। তাদের কোনও সন্তানও হয়নি। মেয়ে জানিয়েছিল, বিহারে সে নাচগান করত। ৯ মাস আগে মেয়ে কালনায় ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে। কদিন আগে আমাদের বাড়িতেও আসে।’