আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় এখন সিবিআই তদন্ত করছে। তার মধ্যেই ‘মেয়েদের রাত দখলের’ রাতেই এক তরুণীকে গলা কেটে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে পূর্ব বর্ধমানের নান্দুরে। ওই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করার জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করল পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ। তবে ধর্ষণের অভিযোগকে সিলমোহর দেয়নি পুলিশ। ওই যুবতী খুনের অভিযোগে তাঁরই এক ‘বন্ধু’ এখন পুলিশের আতসকাচের নীচে রয়েছে। তার বাড়ি ভিন জেলায়। আর তার খোঁজে পুলিশ নানা জায়গায় তল্লাশি শুরু করেছে।
ইতিমধ্যেই আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে সিবিআই আটক করেছে। তারপর চলে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ। আজ, শনিবারও সেই জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তার মধ্যেই পুলিশ সূত্রে খবর, প্রিয়াঙ্কা হাঁসদা (২২) নামে ওই যুবতী বেঙ্গালুরুর এক শপিংমলে কাজ করতেন। আবার পড়াশোনাও করছিলেন। গত সোমবার বেঙ্গালুরু থেকে বাড়ি ফেরেন। বুধবার রাতে বাড়ির অদূরে তাঁর নলি কাটা মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তিনি শৌচকর্মের জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। দীর্ঘক্ষণ বাড়ি না ফেরায় তাঁর মা বাড়ির বাইরে খোঁজাখুঁজি শুরু করলে তাঁর রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। কোনও আততায়ী ওই যুবতীর পূর্বপরিচিত। তার ডাকে সাড়া দিয়ে যুবতী ওই রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন।
আরও পড়ুন: আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় অভিনব প্রতিবাদ, দুর্গাপুজোর অনুদানে ‘না’ উত্তরপাড়ার শক্তি সংঘ ক্লাব
যদিও পুলিশ এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। যদিও পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, ‘বেশ কিছু ক্লু মিলেছে। খুব তাড়াতাড়ি দুষ্কৃতী গ্রেফতার হবে। এই খুনে ধর্ষণ বা শারীরিক নিগ্রহের কোনও ইঙ্গিত ময়নাতদন্তের রিপোর্টে পাওয়া যায়নি। যুবতীটি কোনও কর্মসূচিতে যাওয়ার আগে এই ঘটনা ঘটেছিল বলে যে প্রচার করা হচ্ছে। আসলে সেটাও অসত্য।’ ব্যক্তিগত সম্পর্কের অবনতির কারণ থেকে এই ঘটনা ঘটিয়েছে খুনি। তবে আততায়ী পলাতক। তাঁর খোঁজ চলছে। এই খুন পূর্বপরিকল্পিত কিনা সেটা তদন্তসাপেক্ষ। ধারালো অস্ত্র দিয়ে একজন এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় দোষীদের ফাঁসির দাবিতে পথে নামেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআই তদন্ত অনন্তকাল চলতে পারে না বলে ডেডলাইন বেঁধে দেন তিনি। যদিও এই খুনের ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কাউকে ধরা যায়নি। এই বিষয়ে মৃতার বাবা সুকান্ত হাঁসদার দাবি, ‘মেয়ের সঙ্গে কারও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল না। যাকে পুলিশ সন্দেহ করছে সেই ছেলেটি অন্য জায়গায় থাকে। সে অত দূর থেকে এসে কেমন করে খুন করবে? বাড়ির কাছেই মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। আমরা চাই, পুলিশ খুনিকে দ্রুত গ্রেফতার করুক। তার কঠোর সাজা হওয়া দরকার। পুলিশ অপরাধীকে ধরতে না পারলে সিবিআইকে তদন্তভার দেওয়া হোক।’ শুক্রবার পুলিশ সুপার সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘এক যুবকের খোঁজে তল্লাশি চলছে। সে ওই যুবতীর বন্ধু। তাঁদের মধ্যে অশান্তি হয়ে থাকতে পারে। যুবতীর মোবাইলের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।’