বর্ধমান স্টেশনে এসেছিলেন যুবতী। কলকাতা থেকে বর্ধমানে এসেছিলেন ওই যুবতী। কিন্তু সেখানে যে কারণে এসেছিলেন তা বাস্তবায়িত না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন ওই যুবতী। সেটা দেখতে পেয়ে এক যুবক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যুবতীকে আত্মীয়ের বাড়ি নিয়ে গিয়ে লাগাতার ধর্ষণ করে ওই যুবক বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই যুবতীর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থানার পুলিশ ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত যুবকের নাম প্রদীপ জর। তার বাড়ি কালনা থানার আনুখাল এলাকায়। সোমবার মেমারির দেবীপুরে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে প্রদীপকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারপর অভিযুক্তকে বর্ধমান আদালতে পেশ করা হয়। বিচারক ধৃতকে পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। গত শনিবার থেকে ওই যুবতী নিখোঁজ ছিলেন। একটু মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন ওই যুবতী। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে কলকাতার একবালপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল। কারণ যুবতীর পরিবার কলকাতাতেই থাকেন। সম্প্রতি মেমারির এক যুবকের সঙ্গে বিয়ের ঠিক করেন যুবতীর পরিবার। ওই যুবকের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ ছিল যুবতীর। পরে ওই যুবকের পরিবার বিয়ে দিতে রাজি হয়নি। কিন্তু নির্যাতিতা যুবতী ওই যুবককে খুঁজতেই বর্ধমানে আসেন।
আরও পড়ুন: ‘আমার হাত তোমার হাতে’, নির্যাতিতার বিচার চেয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মানববন্ধন শহরে
পরিবারের সদস্যরা মেয়ের কোনও খোঁজ না পেয়ে পুলিশে নিখোঁজ ডায়েরি করেন। ওই যুবতী হাওড়া থেকে ট্রেন ধরে বর্ধমানে এসেছিলেন। ওই পাত্রের সঙ্গে দেখা করার জন্য। কিন্তু যোগাযোগ করতে পারেননি নির্যাতিতা যুবতী। পথচলতি অনেকের কাছ থেকে মোবাইল নিয়ে ওই যুবকের মোবাইলে ফোন করেন ওই যুবতী বলে পুলিশ জানতে পারে। আর ওই যুবতীর গলার আওয়াজ পেলেই ফোন কেটে দেন ওই যুবক। এই ঘটনায় ভেঙে পড়েন কলকাতার যুবতী। আর হতাশ হয়ে বর্ধমান স্টেশনে বসে থাকেন। রাতে যুবক প্রদীপ বর্ধমানে আসে। একে চিনতেন না যুবতী। এই যুবকের সঙ্গে বিয়ের ঠিকও হয়নি। যুবতীর কাছ থেকে সব জেনে তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় প্রদীপ। তারপর দেবীপুরে আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে লাগাতার ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ যুবতীর।
বর্ধমান স্টেশন থেকে নিয়ে যাওয়ার সময় প্রদীপের ভাল ব্যবহার বিশ্বাস তৈরি করে ওই যুবতীর মনে। কিন্তু আত্মীয়ের বাড়ি নিয়ে যাওযার পর পাশবিক আচরণ শুরু হয়। যুবতী প্রদীপের ফোন থেকে মেমারির ওই যুবককে আবার ফোন করলে তিনি ধরেন। তখন তাঁকে জানান, যুবতী দেবীপুরে আছেন। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে ওই যুবক বিষয়টি মেমারি থানায় জানান। মেমারি থানার পুলিশ একবালপুর থানার নিখোঁজ ডায়েরির কথা জানতে পারে। তারপর যুবতীর পরিবারের সদস্যরা মেমারি থানায় আসেন। যুবতীকেও সেখানে আনা হয়। তখন ওই নির্যাতিতা যুবতী তাঁর মাকে সব জানান। প্রদীপ বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করেছে বলে যুবতীর অভিযোগ। বর্ধমান সদর দক্ষিণের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক অভিষেক মণ্ডল বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নেমে অভিযুক্তকে ধরা হয়েছে। যুবতীর মেডিক্যাল টেস্ট করিয়েবাড়ি পাঠানো হয়েছে।’