লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হওয়ার পর প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে মাস পার করে দিয়েছিল বঙ্গ–বিজেপি। আর এবার চার বিধানসভার উপনির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণা করেই ব্যাপক বিদ্রোহের মুখে পড়ল বঙ্গ–বিজেপি। শুরুতেই অভ্যন্তরীণ কোন্দল যে জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে, তাতে চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিজেপি আদৌ পদ্ম ফোটাতে পারবে কি না সেটা নিয়ে সন্দিহান সবপক্ষই। এবারের লোকসভা নির্বাচনে ৬টি আসন কমে গিয়ে বিজেপি পেয়েছে ১২টি আসন। আর ৭টি আসন বেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের আসন দাঁড়িয়েছে ২৯। আর তার মধ্যেই এমন গোষ্ঠীকোন্দল এবং বিদ্রোহ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।
এই গোটা কোন্দলের কারণ উপনির্বাচনের প্রার্থী পছন্দ নয়। আর এইসব প্রার্থী যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বদল না হয় তাহলে বড় বিক্ষোভের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন নেতা–কর্মীরা। সেই সময়সীমা এখন পেরিয়ে গিয়েছে। এই কারণে আর বিক্ষোভের পথে না গিয়ে দলের পদ ছেড়ে দিলেন বাগদার দুই বিজেপি নেতা। আর তাঁদের পদত্যাগের পর ভেঙে গেল গোটা মণ্ডল কমিটি। উপনির্বাচনের আগে এমন পরিস্থিতিতে বেআব্রু হয়ে গেল বিজেপির কোন্দল। এই ঘটনা নিয়ে বনগাঁয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসের খোঁচা, ‘এই কারণেই উপনির্বাচনে ওদের ভরাডুবি হবে। তৃণমূলের জয় ঠেকাতে পারবে না।’
আরও পড়ুন: আটকে থাকা পর্যটকদের সড়কপথে উদ্ধার করা চলছে, সিকিম ধসে জনজীবন বিপর্যস্ত
আগামী ১০ জুলাই চার বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। তার মধ্যে একটি বাগদা। এই আসনের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস পদত্যাগ করার জেরে উপনির্বাচন হচ্ছে। লোকসভা নির্বাচনে বনগাঁ কেন্দ্রের প্রার্থী হন এবং পরাজিত হন। তাই আসনটি এখন বিধায়কশূন্য। এই বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন মতুয়া ঠাকুরবাড়ির কনিষ্ঠ সদস্য মধুপর্ণা ঠাকুর। তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী করেছে বিনয়কুমার বিশ্বাসকে। এই প্রার্থী ‘বহিরাগত’। তাই তাঁকে মেনে নেননি জেলা বিজেপির বড় অংশ। তাঁরা হুঁশিয়ারি দেন, এই প্রার্থী বদল না করা হলে চাপে ফেলা হবে বলে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। নির্দল প্রার্থী দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কিন্তু এই হুঁশিয়ারিতে তেমন কাজ হয়নি। তাই সময়সীমা পেরিয়ে যেতেই পদত্যাগ করলেন বিজেপির বাগদা–২ মণ্ডলের সভাপতি সমীর কুমার বিশ্বাস। তাঁর পদত্যাগের পর বাগদা–২ নম্বর মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক জ্যোতির্ময় দাস ইস্তফা দেন। তাই মণ্ডল কমিটি ভেঙে যায়। এই বিষয়ে বাগদা–২ নম্বর মণ্ডলের সভাপতি সমীর কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা জানিয়েছিলাম বাগদার ভূমিপুত্রকে প্রার্থী করতে। কিন্তু সেখানে অন্য একজনকে প্রার্থী করা হল। তাই পদত্যাগ করলাম। মনে হচ্ছে কোনও কিছুর বিনিময়ে বিনয়কুমার বিশ্বাসকে প্রার্থী করা হয়েছে।’