আজ, বুধবারই রাজ্য মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ হয়ে গিয়েছে৷ এটা যে হবে তা আগেই জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’দিন আগেই তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন সাজানো হয়েছিল। সেক্ষেত্রে সামনে রাখা হয়েছিল পঞ্চায়েত নির্বাচনকে। একইসঙ্গে জেলার সংগঠনকে শক্তিশালী করাও লক্ষ্য ছিল। আর মন্ত্রিসভায় জেলার নেতাদের স্থান দিয়ে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে জয়ের আসনকে নিশ্চিত করা হল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
কেমন সমীকরণ উঠে আসছে? বুধবার রাজভবনে নতুন ৭ মুখ–সহ মোট ৮ মন্ত্রী শপথবাক্য পাঠ করেন। নতুন আট মন্ত্রীর মধ্যে রয়েছেন—উদয়ন গুহ, তাজমুল হোসেন, পার্থ ভৌমিক, প্রদীপ মজুমদার, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, বাবুল সুপ্রিয়, বিপ্লব রায়চৌধুরী এবং সত্যজিৎ বর্মণ। তাঁরা রাজ্যপাল লা গণেশনের কাছে ধাপে ধাপে শপথ নেন। এখানে কলকাতার মন্ত্রী বলতে বাবুল সুপ্রিয়। বিজেপির সঙ্গে ঘর করে আসায় তাঁর অভিজ্ঞতা বিপুল। দু’বারের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন। লোকসভা নির্বাচনে দক্ষিণ কলকাতায় তিনি বড় সাফল্য তুলে আনবেন।
জেলার সমীকরণ কেমন হবে? জাঙ্গিপাড়া এবং দুর্গাপুরের দুই বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী এবং প্রদীপ মজুমদার পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন৷ সেক্ষেত্রে জেলা এবং শিল্পাঞ্চলে ভাল প্রভাব পড়বে। এখানে সংগঠন মজবুত করতে নতুন করে সাজানো হয়েছে। তার সঙ্গে পূর্ণমন্ত্রী পাওয়ায় জেলায় বড় প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে সংগঠন এবং মন্ত্রিসভা একযোগে কাজ করলে বড় সাফল্য আসবে। তাই এমন সমীকরণ সাজানো হয়েছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? দিনহাটার উপনির্বাচনে রেকর্ড ভোটে জয়ী হন উদয়ন গুহ। এবার ঠাঁই হল মন্ত্রিসভায়৷ উত্তরবঙ্গকে জোর দিতেই উদয়নকে সামনে নিয়ে আসা হয়েছে। উদয়ন গুহ মন্ত্রী হওয়ায় এখানে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিককে সোজা টক্কর দেওয়া যাবে। ফলে পঞ্চায়েত থেকে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে পরাস্ত করাই লক্ষ্য। আর উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির বিধায়ক হলেন পার্থ ভৌমিক৷ তাঁকেও পূর্ণমন্ত্রী করা হয়েছে৷ অর্জুন গড়ে পার্থ ভৌমিক একুশের নির্বাচনে খেটে নিজের ক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছিলেন। যার পুরষ্কার পেলেন। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে গোটা জেলায় প্রভাব ফেলতেই পার্থকে সামনে আনা হল বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যদের ক্ষেত্রে কেমন সমীকরণ? ঝাড়গ্রামের বিধায়ক বীরবাহা হাঁসদাকে আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিমন্ত্রী করেছিলেন৷ এবার তাঁকে স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে৷ ফলে আদিবাসী ভোটব্যাঙ্ক সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেসের ঝুলিতে আসবে। এদিন তিনি সাঁওতালি ভাষায় শপথ নেন৷ তাঁর সঙ্গে স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন পাঁশকুড়ার বিধায়ক বিপ্লব রায়চৌধুরী৷ অধিকারী গড়ে থাবা আরও বেশি করে বসাতেই তাঁকে সামনে আনা হয়েছে। এছাড়া হেমতাবাদের সত্যজিৎ বর্মন এবং মুর্শিদাবাদের হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তাজমুল হোসেন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন৷ সুতরাং সংখ্যালঘু ভোট থেকে শুরু করে সার্বিক মানুষের সমর্থন মিলবে।