মন্ত্রিসভায় রদবদল নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে নবান্নে। কারণ ২৭ দিন পর এই রদবদলের ফাইল সই করে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস নবান্নে পাঠিয়েছে। দীর্ঘদিন পড়েছিল এই ফাইল রাজভবনে। তার মধ্যে মন্ত্রীত্ব চলে গিয়েছে অখিল গিরির। সরকারি মহিলা অফিসারের সঙ্গে অভব্য আচরণের জন্য কারামন্ত্রীর পদ থেকে তাঁকে ইস্তফা দিতে হয়েছে। তাই পরবর্তী মন্ত্রী হিসেবে সবচেয়ে বেশি যে নামটি চর্চায় উঠে আসছে সেটি হল—অখিল গিরির ঘোর বিরোধী হিসাবে পরিচিত বিধায়ক উত্তম বারিককে নিয়ে। এবারের লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে কাঁথি থেকে প্রার্থী করা হয়েছিল। যদিও তিনি হেরে যান।
আগামী ২০২৬ সালে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। সেক্ষেত্রে ফোকাস করা হবে পূর্ব মেদিনীপুরকে। কারণ এখানের দুটি লোকসভা আসনই পেয়েছে বিজেপি। তাই এবার পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক, পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে মন্ত্রিসভায় নিয়ে আসতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে সূত্রের খবর। তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রে খবর, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পছন্দের নেতাদের মধ্যে নাম আছে উত্তম বারিকের। তাই লোকসভা নির্বাচনে কাঁথি থেকে প্রার্থী করা হয়েছিল। ভাল ফাইট দিয়েছিলেন উত্তম। এবার তাঁকে কারামন্ত্রী করা হতে পারে বলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। যদিও নবান্নের একটি সূত্র বলছে, উত্তম বারিককে অন্য কোনও মন্ত্রক দেওয়া হতে পারে।
আরও পড়ুন: সিপিএম নেতা সুশান্ত ঘোষের বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের অভিযোগ, তোলপাড় দলে
পার্থ ভৌমিক সাংসদ হওয়ার পর থেকেই চর্চা শুরু হয়েছিল, কে হবেন সেচমন্ত্রী। নবান্ন সূত্রে খবর, মানস ভুঁইয়াকে সেচমন্ত্রী করা হয়েছে। যেহেতু তাঁর পূর্ব অভিজ্ঞতা রয়েছে। আর উত্তম বারিককে মন্ত্রিসভায় নিয়ে এসে মন্ত্রী করলে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা থেকে জোড়া মন্ত্রী থাকবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভায়। এখন নন্দীগ্রাম থেকে বিপ্লব রায়চৌধুরী মৎস্যমন্ত্রী রয়েছেন। এই বিষয়ে উত্তম বারিক বলেন, ‘আপনারা যেমন বলছেন, আমিও তেমনি শুনছি।’ কিন্তু উত্তম বারিক মন্ত্রী হলে জেলা পরিষদের নতুন সভাধিপতি দেখতে হবে। এই ঘটনা ঘটলে চাপে থাকবেন বিরোধী দলনেতা বলে মনে করা হচ্ছে।
আগামী কয়েকদিনের মধ্যে মন্ত্রিসভায় রদবদল ঘটতে চলেছে বলে সূত্রের খবর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৯ অগস্ট ঝাড়গ্রাম সফরে যাবেন। তার আগে মন্ত্রিসভায় রদবদল করেন। আবার ফিরে এসে কারামন্ত্রীর নাম ঘোষণা করতে পারেন। প্রথমবার ২০০৮ সালে পূর্ব মেদিনীপুরে জেলা পরিষদ জিতেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ২০১১ সালে বামেদের হারিয়ে ক্ষমতায় আসে তারা। প্রথমে তমলুকের বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র রাজ্যের মন্ত্রী হন। পরে নন্দীগ্রাম বিধানসভায় ২০১৬ সালে জিতে মন্ত্রী হন শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু এখন বিজেপিতে গিয়েছেন। পাঁশকুড়া (পূর্ব) বিধানসভা থেকে নির্বাচিত হয়ে বিপ্লব রায়চৌধুরী মৎস্যমন্ত্রী হন।