আট বছরের আগেকার তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষ মামলায় ১৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে পূর্ব বর্ধমান জেলা আদালত। দোষীদের তালিকায় রয়েছেন বর্ধমান উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারপার্সন তথা বর্ধমান-১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি-সহ অন্যরা। অভিযুক্তদের মধ্যে চারজন অসুস্থ হয়ে পড়ায় মঙ্গলবার রায়দান করার কথা থাকলেও স্থগিত থাকে। ফলে বুধবার তাঁদের সাজা ঘোষণা করার কথা। কিন্তু তারইমধ্যে বিচারকের বদলির অর্ডার এসেছে। তানিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: ‘এটা ইউরোপ নাকি?’ হবু দম্পতির প্রেমে আপত্তি তৃণমূল নেতার, প্রেমিককে বেধড়ক মার!
দ্বিতীয় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক অরবিন্দ মিশ্র এর আগের দিন ১৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে আজ রায়দান করবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন। তাঁকেই বদলির নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রশাসনিক কমিটি। আর তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে আদালত চত্বরে। আইনজীবী মহলের বক্তব্য, বিচারকের বদলির অর্ডারের সঙ্গে মামলার কোনও সম্পর্ক নেই। এটা রুটিন বদলি। তাছাড়া রায়দনের ক্ষেত্রেও কোনও সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পূর্ব বর্ধমানের নাড়িগ্রাম দাসপাড়ায় তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয়েছিলেন তৎকালীন পঞ্চায়েত সদস্য জীবন পাল। ঘটনায় তিনি দলের কয়েকজন নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ আনেন। অভিযোগের ভিত্তিতে কাকলি গুপ্ত-সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। দীর্ঘদিন ধরে সেই মামলা চলছিল আদালতে। সোমবার বিচারক অরবিন্দ মিশ্র ১৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন। মঙ্গলবার রায় ঘোষণার কথা জানিয়েছিলেন তিনি। তবে দোষী সাব্যস্তদের মধ্যে কাকলি গুপ্ত, যুব সভাপতি মানস ভট্টাচার্য, পঞ্চায়েত প্রধান কার্তিক বাগ ও রায়ান-১ অঞ্চলের সভাপতি সেখ জামাল অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁদের। এরইমধ্যে আজ বদলির নির্দেশ আসায় রায়দান জটিলতা তৈরি হয়।
এদিকে, নেতারা অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁদের দেখতে হাসপাতালে যান রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তিনি তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন এবং শারীরিক অবস্থা নিয়ে খোঁজখবর নেন। সরকারি পক্ষের আইনজীবী হরিদাস মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বুধবার অসুস্থদের সশরীরে হাজির না করা গেলে ভার্চুয়াল শুনানির মাধ্যমে রায় ঘোষণা করবেন বিচারক। দোষীদের পক্ষে আইনজীবী বিশ্বজিৎ দাস বলেন, জেলারকে বিচারক নির্দেশ দিয়েছেন, যদি বুধবার তাঁদের সশরীরে হাজির না করানো যায় তাহলে ভার্চুয়াল মাধ্যমে রায়দান করবেন।
তবে বিচারকের বদলি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির দাবি, যাঁরা শাসক দলের বিরুদ্ধে যাচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে এরকম হচ্ছে। আগে পুলিশের সঙ্গে এরকম হতো এখন বিচারকের সঙ্গে হচ্ছে। তবে তৃণমূলের দাবি, এটা রুটিন বদলি। এর সঙ্গে রয়দানের কোনও সম্পর্ক নেই।