সংবিধান বহির্ভূত ভাবে ‘আরামবাগ টিভি’ নামে ইউটিউব চ্যানেলের সম্পাদক, তাঁর স্ত্রী এবং চ্যানেলের এক সাংবাদিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই বিষয়ে ডিজিপির থেকে রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট।
গত ২৯ জুলাই গভীর রাতে ওই ইউডিউব চ্যানেলের সম্পাদক সফিকুল ইসলামের বাড়িতে চড়াও হয়ে দরজা-জানলা ভেঙে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। একই সঙ্গে গ্রেফতার হন তাঁর স্ত্রী আলিমা খাতুন ও চ্যানেলের সাংবাদিক সুরজ আলি খান। আরামবাগ থানার আইসি পার্থসারথি হালদারের নেতৃত্বে পুলিশের এই অভিযানের দৃশ্য দেখা গিয়েছে সিসিটিভি ফুটেজে।
জানা গিয়েছে, ওই রাতে স্থানীয় তৃণমূল নেতার দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতেই গ্রেফতার অভিযান চালায় পুলিশ। অথচ যে ঘটনার ভিত্তিতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল, তা তিন মাসের পুরনো। তা ছাড়া গ্রেফতার করা হয়েছে বিনা নোটিশে।
আদালতে সফিকুল ইসলামের তরফে আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন চট্টোপাধ্যায় সওয়াল করেন, লকডাউনের মধ্যে আরামবাগের ৫৭টি ক্লাবকে রাজ্য সরকারের তরফে এক লাখ টাকার চেক দেওয়া, বালির লরি আটকে পুলিশের ঘুষ খাওয়ার মতো ঘটনা প্রকাশ্যে আনার পরেই শাসকদলের রোষে পড়েন সফিকুল ও তাঁর ইউটিউব চ্যানেল। তারই জেরে সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাঁকে ও তাঁর সহকর্মীদের গ্রেফতার করে হেনস্থার চক্রান্ত করা হয়েছে। এ ভাবে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন বিকাশবাবু।
মামলায় যুক্ত আর এক আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, যে অভিযোগে আরামবাগ টিভি-র সম্পাদক ও কর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তা ভিত্তিহীন। তা ছাড়া তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে বেআইনি ভাবে। সেই সঙ্গে, ওই ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে যুক্তদের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ পরিকল্পিত ভাবে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন আদালতে। তাঁর আশা, পুলিশের পক্ষপাতিত্বমূলক আচরণের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে হাই কোর্ট।
মামলায় অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীদের সওয়াল শোনার পরে আরামবাগ টিভি ইউটিউব চ্যানেলের সম্পাদক ও সাংবাদিকদের গ্রেফতারের পদ্ধতি পর্যালোচনা করে সবিস্তারে রিপোকর্ট জমা দিতে ডিজিপি-কে নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী।