ভুয়ো এক্সচেঞ্জ কার্ড দেখিয়ে কি প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পেয়েছেন কেউ? তা খতিয়ে দেখতে ২০০৯ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সকলের এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ কার্ড যাচাইয়ের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেজন্য সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু নির্দেশ দিয়েছেন, সকলের এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ কার্ড যাচাই করে আগামী ২৭ জানুয়ারির মধ্যে শিক্ষা দফতরকে রিপোর্ট পেশ করতে হবে। সেইসঙ্গে ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। ২৭ জানুয়ারি যখন পরবর্তী শুনানি হবে, সেদিন সিআইডিকে রিপোর্ট জমা করতে হবে।
২৬ জনের চাকরি বাতিল হয়েছে
আর যে নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট এমন নির্দেশ দিয়েছে, তাতে এক্সচেঞ্জ কার্ড জালিয়াতির অভিযোগে ইতিমধ্যে কয়েকজনের চাকরি বাতিল হয়েছে। বাম আমলের শেষের দিকে ২০০৯ সালের প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ কার্ড দিয়ে অনেকেই চাকরি পান। যদিও পরবর্তীতে অভিযোগ ওঠে যে কার্ড জালিয়াতি করে কেউ-কেউ চাকরি পেয়েছেন।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। বাতিল করা হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার ২৬ জনের চাকরি। যদিও শুধু ওই জেলায় নয়, রাজ্যের অন্যত্রও ভুয়ো এক্সচেঞ্জ কার্ড দেখিয়ে কেউ চাকরি পেয়েছেন কিনা, সেটা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, জালিয়াতির পুরো তদন্ত করবে সিআইডি। প্রয়োজন বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করা হতে পারেও বলে জানিয়েছেন বিচারপতি বসু।
রাজ্যে একের পর এক নিয়োগ দুর্নীতি
গত কয়েক বছরে রাজ্যে একের পর এক নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। যে তালিকায় ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) নিয়োগ প্রক্রিয়াও আছে। গত ২২ এপ্রিল সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্ট বলেছিল, এমনভাবে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া চলেছে, তাতে চাল থেকে কাঁকর আলাদা করা যাবে না।
সেই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যের তরফে দাবি করা হয়েছে, হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায় যথাযথ নয়। সেইসঙ্গে যোগ্যদের থেকে অযোগ্যদের আলাদা করা যাবে বলে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেছে কমিশন এবং রাজ্য সরকার। কমিশনের তরফে দাবি করা হয়েছে যে ১৯,০০০ জনের চাকরি বৈধ। সে বিষয়ে এখনও সুপ্রিম কোর্ট চূড়ান্ত কোনও রায় দেয়নি।