ক্যানিংয়ের গোপালপুরে ৩ তৃণমূলকর্মী খুনের ঘটনায় কি কিছু লুকানোর চেষ্টা করছে পুলিশ? বুধবার ঘটনাস্থলে খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণের সময় পুলিশের আচরণে উঠছে সেই প্রশ্ন। এদিন ঘটনাস্থলে হাজির ছিলেন পুলিশ সুপার শ্রীমতী পুষ্পা। এদিন অভিযুক্তকে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কোনও কথা বলতে দেননি তিনি। এমনকী যাদের নির্দেশে ধৃত রফিকুল সর্দার এই কাজ করেছে, পুনর্নির্মাণের সময় সংবাদমাধ্যমের সামনে তাদের নাম নিতে বারণ করেন তিনি।
গত ৭ জুলাই সকালে ক্যানিংয়ের গোপালনগর গ্রামপঞ্চায়েতে নৃশংসভাবে খুন হন ৩ তৃণমূল নেতা। মোটরসাইকেলে করে গ্রামের রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তাদের গুলি করে ও কুপিয়ে খুন করা হয়। গ্রামেই পাকা রাস্তার ওপর থেকে উদ্ধার হয় পঞ্চায়েত সদস্য স্বপন মাঝির দেহ। তাঁকে গুলি করে খুন করা হয়েছিল। পাশে মাঠ থেকে বুথ সভাপতি ভূতনাথ প্রামাণিক ও যুব তৃণমূলের বুথ সভাপতি ঝন্টু হালদারের দেহ উদ্ধার হয়। তাঁদের ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে খুনি আরেক তৃণমূল কর্মী রফিকুল সর্দার।
রফিকুলকে ধরতে তার মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করতে শুরু করে পুলিশ। জানা যায়, কেরলে পালিয়েছে সে। গত ১৬ জুলাই রফিকুলকে ধরতে কেরল যায় বারুইপুর জেলা পুলিশের বিশেষ দল। ২ দিন আগে তাকে কেরলের কোঝিকোড়ে সমুদ্র সৈকত থেকে গ্রেফতার করেন বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ আধিকারিকরা। এর পর জানা যায়, সেখানে রং মিস্ত্রি সেজে আত্মগোপন করে ছিল সে।
বুধবার ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য রফিকুলকে ক্যানিয়ের গোপালনগরে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে গোটা ঘটনা অভিনয় করে দেখায় অভিযুক্ত। কী ভাবে সে মাঠে লুকিয়ে ছিল। কখন সে স্বপন মাঝিদের অবস্থান জানতে পারে। খুনের পর কী ভাবে এলাকা ছাড়েন সবই অভিনয় করে দেখায় সে। কিন্তু অভিযুক্তকে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে দেয়নি। এমনকী কে তাকে ফোন করে স্বপন মাঝিদের অবস্থান জানিয়েছিল তাও তাঁকে বলতে বারণ করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, নাম প্রকাশ হয়ে গেলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যেতে পারে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কেন পুলিশের তরফে এই বাড়তি গোপনীয়তা? খুনের মূল পরিকল্পনাকারীর নাম প্রকাশ্যে এলে কী সমস্যা পুলিশের? না কি কাউকে আড়াল করতে রফিকুলের মুখ বন্ধ রাখার চেষ্টা করছে পুলিশ?