বারবার ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায় অনুপ্রবেশ করার ঘটনা ঘটছে। তারপরও কড়া হতে পারছে না বিএসএফ বলে অভিযোগ। আজ, শুক্রবার আবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে এক বাংলাদেশি যুবক। ওপার বাংলা থেকে ইচ্ছামতী নদী পেরিয়ে ঢুকে পড়েছে এপার বাংলায়। তারপর দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং এলাকায় গা–ঢাকা দেওয়া যাতে যায় সেই চেষ্টা করছিল বলে অভিযোগ। কিন্তু ওখান থেকেই বাংলাদেশের নাগরিক ওই যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই যুবককে এলাকায় দিশাহীনভাবে ঘুরতে দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হওয়ায় যুবককে পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এই ঘটনা নিয়ে এখন আলোড়ন পড়ে গিয়েছে ক্যানিং এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, গ্রেফতার হওয়া ওই যুবকের নাম হাবিবুল্লা গাজি। বৃহস্পতিবার রাতে ক্যানিংয়ের ইটখোলা পঞ্চায়েতের বাদামতলা এলাকায় তাকে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছিল। জলপথে সীমানা পেরিয়ে এপার বাংলায় ঢুকে পড়েছিল হাবিবুল্লা। এখানে এসে কোনও কাজ করবে বলে পরিকল্পনা ছিল তার। কিন্তু ওই যুবককে বিক্ষিপ্তভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে স্থানীয় গ্রামবাসীদের সন্দেহ হয়। তখন তাকে ঘিরে ধরে নানা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেন গ্রামবাসীরা। যদিও তাদের কাছে মুখ খোলেনি ওই যুবক। তখন ক্যানিং থানায় খবর গ্রামবাসীরা খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। আর ওই যুবককে প্রশ্ন করতে থাকে।
আরও পড়ুন: মোহন ভাগবতের সভার অনুমতি দিল কলকাতা হাইকোর্ট, বেঁধে দেওয়া হয়েছে শর্ত
যুবক অত্যন্ত দৃঢ়তা দেখানোয় তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। তারপর ম্যারাথন জেরার মুখে পড়তেই আসল সত্য বেরিয়ে আসে। তার কাছ থেকে ভারতের নাগরিকত্বের কোনও বৈধ কাগজপত্রও মেলেনি। তার জেরে পুলিশের সন্দেহ আরও গাঢ় হয়। আর পর পর প্রশ্নের মুখে পড়ে ওই যুবক যে বাংলাদেশ থেকে এসেছিল সেটা বলে ফেলে। বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর থানা এলাকায় ওই যুবকের বাড়ি। ইছামতী নদী পেরিয়ে ভারতে এসেছে সে। এইসব তথ্য দেওয়ার পর অনুপ্রবেশের অভিযোগে ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়। এখন কী কারণে সে ভারতে এসেছিল? সেটা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। ধৃতকে আজ শুক্রবার আদালতে তোলা হয়।
ইদানিংকালে বহু বাংলাদেশের নাগরিক ভারতে এসে ধরা পড়েছে। ওখানে উত্তপ্ত পরিবেশ তৈরি হয়ে রয়েছে। রুটি–রুজিতে টান পড়েছে। তাই সীমান্ত পেরিয়ে এপার বাংলায় ঢুকে পড়ার প্রবণতা বেড়েছে। এই ক্যানিংয়েই কিছুদিন আগে কাশ্মীরের এক জঙ্গি গ্রেফতার হয়। বেশ কয়েকটি জঙ্গি ধরা পড়েছিল এপারে। এখন থেকে ওইসব এলাকায় বাসিন্দারাও সতর্ক রয়েছেন। অপরিচিত মুখ দেখলে বাসিন্দারা পুলিশে খবর দিচ্ছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনাই নয়, উত্তর ২৪ পরগনা, মালদা, মুর্শিদাবাদ, কোচবিহারের সীমান্ত এলাকা থেকে বারবার অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেছে। সীমান্ত এলাকায় বিএসএফের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।