গরু পাচার কাণ্ডের তদন্তে নেমে সিবিআই এবার অনুব্রত ও তাঁর পরিবারের অ্যাকাউন্টে কোটি কোটি টাকা জমা পড়ার সন্ধান পেল। এমনকী কয়েকজন আত্মীয়স্বজনের অ্যাকাউন্টেও গিয়েছে এই টাকা বলে সিবিআই দাবি করেছে। এই তথ্য হাতে পেয়ে তিনটি ব্যাঙ্কের অফিসারদের তলব করল সিবিআই। ২০১৭ সালের মাঝামাঝি থেকে ২০২১ সালের গোড়া পর্যন্ত ৪ বছরে কোটি কোটি নগদ টাকা জমা পড়েছে বীরভূমের দুটি রাষ্ট্রায়ত্ত এবং একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে।
ঠিক কী দাবি সিবিআইয়ের? সিবিআই সূত্রে খবর, মোট ৮টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য হাতে এসেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। এই অ্যাকাউন্টগুলিতে ২০১৭–২০২১ সালের মধ্যে মোট ১৬ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা জমা পড়েছে। এই বিপুল পরিমাণ টাকা দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত এবং একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে জমা পড়েছে। নিয়ম মেনে এই টাকা জমা পড়েছিল কি না সেটা জানতেই তলব করা হয়েছে ব্যাঙ্কের অফিসারদের। অনুব্রত মণ্ডল, তাঁর স্ত্রী ছবি মণ্ডল, মেয়ে সুকন্যা, মেয়ের দুটি সংস্থা, ওই সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর, অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বিদ্যুৎবরণ গায়েনের ৮টি অ্যাকাউন্টে এই টাকা গিয়েছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? গরু পাচারের বেআইনি কারবার করেই অনুব্রত মণ্ডল নামে–বেনামে বিপুল সম্পত্তির মালিক হয়েছিলেন বলে দাবি সিবিআই–ইডি’র। এই বিপুল পরিমাণ টাকার উৎস খতিয়ে দেখছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ব্যাঙ্ক কর্মীদের সঙ্গে অনুব্রত বা তাঁর ঘনিষ্ঠদের কোনও যোগসাজশ ছিল কি না সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গত ১১ নভেম্বর অনুব্রত মণ্ডলের আবার ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। তাঁকে গরু পাচার মামলায় আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি লটারিকাণ্ডের তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসে সিবিআইয়ের তদন্তে! সিবিআইয়ের দাবি, অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লটারি জেতার টাকার হদিশ মিলেছে। এবার ৫০ লক্ষ টাকা! বাবা–মেয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখে পাঁচবার লটারি জেতার হদিশ পেয়েছে গোয়েন্দারা। ২০১৯ সালে অনুব্রত মণ্ডলের অ্যাকাউন্টে লটারি জেতার ১০ লক্ষ টাকা ঢোকে। ওই বছরেই তাঁর মেয়ের অ্যাকাউন্টে ঢোকে ২৫ এবং ২৬ লক্ষ টাকা। যে নতুন ৫০ লক্ষ টাকার হদিশ মিলেছে, সেই টাকা সুকন্যার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল ২০২০ সালে। আর অনুব্রত মণ্ডল ১ কোটি টাকার লটারি জিতেছিলেন ২০২১ সালে।