একদিকে, সারদা এবং রোজভ্যালি মামলায় চূড়ান্ত চার্জশিট জমা দিতে তদন্ত চালিয়ে চাচ্ছে সিবিআই, আরেক দিকে তারা নজর রেখেছে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার প্রায় ২৫টি অর্থ লগ্নিকারী সংস্থার ওপর। গত তিন মাস ধরে ওই প্রত্যেকটি সংস্থার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করে ইতিমধ্যে তদন্তও শুরু করেছে সিবিআই।
খোদ শহর কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনা, হাওড়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এই চিটফান্ড সংস্থাগুলিতে কষ্টার্জিত অর্থ লগ্নি করে বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে ২০১৩ সাল থেকে রাজ্যের বিভিন্ন থানায় অভিযোগ দায়ের করেন লগ্নিকারীরা। সেগুলিই এবার হাতে এসেছে সিবিআইয়ের। তবে গোয়ান্দারা জানিয়েছেন, ওই অর্থ লগ্নিকারী সংস্থাগুলির কর্ণধাররা ইতিমধ্যে বেপাত্তা। তাঁদের খোঁজও শুরু হয়েছে।
ওই সংস্থাগুলির মধ্যে রয়েছে, কলকাতার সাউথ এভিনিউয়ের ফিউচার মার্গ রিয়েলিটি, উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের এমপিবি মার্কেটিং সার্ভিসেস লিমিটেডে, মধ্যমগ্রামের আরটিসি রিয়েল ট্রেড, হেমনগরের ইউনিয়ন অ্যাগ্রোটেক লিমিটেড, বাগুইআটির এক্সপ্রেস কালটিভেশন প্রাইভেট লিমিটেড, হাওড়ার বাগনানের রেভেলিউশন মার্কেটিং কনসেপ্ট, বিষ্ণুপুরের হাসপার ম্যাক্রো ফিনান্স সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট ইত্যাদি। এ ছাড়া পূর্ব মেদিনীপুর, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, কোচবিহার— এসব জেলা থেকেও হাজার হাজার অভিযোগ পেয়েছেন সিবিআই আধিকারিকরা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সে সব চিটফান্ড সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে জানান সিবিআইয়ের এক কর্তা।
জানা গিয়েছে, বাগুইআটির এক্সপ্রেস কালটিভেশন প্রাইভেট লিমিটেডের কর্ণধার রয়েছেন ১০ জন ব্যক্তি। অভিযোগ, এক এজেন্ট তাঁর গ্রাহকদের হয়ে টাকা চাইতে গেলে তাঁকে মারধর করা হয়। উত্তর ২৪ পরগনার হেমনগরের ইউনিয়ন অ্যাগ্রোটেক লিমিটেডের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সাধারণ মানুষকে বড় স্বপ্ন দেখিয়ে জেলায় থাকা দফতরে এনে টাকা নিয়ে নিতেন এজেন্টরা। এমনই এক আর্থিক সংস্থায় ১২ লক্ষ টাকা লগ্নি করে প্রতারিত হয়েছেন হাবড়ার বাসিন্দা এক প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিক। এমন হাজারো অভিযোগ হাতে এসেছে সিবিআইয়ের।