গরুপাচার মামলায় মিসিং লিঙ্ক কি লুকিয়ে বোলপুরেই? সেই জল্পনার মধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর-সহ একযোগে অনুব্রত মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ তিনজনের বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে সিবিআই। অনুব্রতের চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট মণীশ কোঠারির বাড়িতেও অভিযান চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সূত্রের খবর, সিবিআইয়ের স্ক্যানারে আছেন অনুব্রতের আরও কয়েকজন ঘনিষ্ঠ।
বুধবার সকালে বোলপুর পুরসভার ১৯ ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুঁড়িপাড়ার বাড়িতে হাজির হন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা। তাঁর বাড়ি ঘিরে ফেলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। যেখান থেকে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রতের বাড়ির দূরত্ব বেশি নয়। সূত্রের খবর, বোলপুরের রাজনৈতিক মহলে অনুব্রতের ছায়াসঙ্গী হিসেবে পরিচিত বিশ্বজ্যোতি। তাঁকে হামেশাই অনুব্রতের বাড়িতে দেখা যেত। কেষ্টর বিভিন্ন কাজের দেখভাল করতেন বলে সূত্রের খবর। সিবিআই সূত্রের খবর, তাঁকে আটক করা হতে পারে।
আরও পড়ুন: CBI: অনুব্রত মণ্ডল তদন্তে সহযোগিতা করছেন না, দেড় ঘন্টা জেরার নির্যাস শূন্য
বিশ্বজ্যোতির বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে সুদীপ রায় তৃণমূল নেতা এবং উকিলপট্টিতে এক ব্যক্তির বাড়িতেও তল্লাশি চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআই সূত্রে খবর, গরুপাচার মামলায় তিনজনের নাম উঠে এসেছে। তারইমধ্যে অনুব্রতের চাটার্ড অ্যাকাউন্টেন্টের বাড়িতে আসেন সিবিআই আধিকারিকরা। তাঁকে ইতিমধ্যে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। সূত্রের খবর, সিবিআইয়ের স্ক্যানারে আছেন অনুব্রতের আরও কয়েকজন ঘনিষ্ঠ। তাঁদের বাড়িতে আজই অভিযান চালানো হতে পারে। সেজন্য কলকাতা এবং দুর্গাপুর থেকে সিবিআই আধিকারিকরা এসেছেন।
জেলে অনুব্রত
গরুপাচার মামলায় চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে অনুব্রতকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। একাধিক দফায় সিবিআই হেফাজতের পর তাঁকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত। আপাতত আসানসোল সংশোধনাগারে আছেন অনুব্রত। মঙ্গলবার সংশোধনাগারে গিয়ে অনুব্রতকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআই আধিকারিকরা। সিবিআই সূত্রের খবর, জিজ্ঞাসাবাদে একেবারেই সহযোগিতা করেননি অনুব্রত।
মঙ্গলবার সংশোধনাগারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় অনুব্রতের প্রাক্তন দেহরক্ষী সহগল হোসেনকেও। পরদিনই অনুব্রত ঘনিষ্ঠদের বাড়িতে সিবিআই অভিযান চালানোয় প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি মঙ্গলবারের জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব থেকে যে তথ্য় উঠে এসেছে, তার ভিত্তিতে বুধবার ময়দানে নেমেছে সিবিআই? যদিও বিষয়টি নিয়ে সিবিআইয়ের তরফে কিছু জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: ‘কেষ্টর মতো সাহায্যকারী ছেলে হয় না’, মেয়ো রোডের মঞ্চ থেকে দাবি মমতার
কেষ্টর পাশে মমতা
অনুব্রতকে গ্রেফতারির পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, 'পরশুদিন কেষ্টকে গ্রেফতার করলেন কেন? কী করেছিল কেষ্ট? যতবার নির্বাচন হয়েছে, ততবার ওকে বেরোতে দেননি। কেষ্টকে তো কোনওদিন বেরোতে দেয় না। কেষ্টকে আটকে দেয়। কেষ্টকে জেলে আটকালে কী হবে? ছেলেটা গত দু'বছরে কত কষ্ট পেয়েছে। ক্যানসারে স্ত্রী মারা গিয়েছে। প্রতিদিন কলকাতা-বোলপুর করত। গত বছর পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় ওর স্ত্রী'র যখন অপারেশন হয়েছিল, তখন কেষ্ট বলেছিল যে ওর বউ বলছিল, পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজ কর।