সিবিআই হানায় ভয় পেয়ে বড়ঞার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা পুকুরে ছুড়ে ফেলেছিলেন একটি মোবাইল। টানা ৩৬ ঘণ্টা তল্লাশির পর একটি মোবাইল উদ্ধার করল সিবিআই বলে খবর। রবিবাসরীয় সকালে এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খবর। যদিও দ্বিতীয় মোবাইলটির এখনও সন্ধান মেলেনি। তবে তার খোঁজে তল্লাশি জারি আছে। তিন দিন ধরে কখনও আমবাগান, কখনও বাড়ির পাশের পুকুর কিংবা আবর্জনার স্তূপের মধ্যে সিবিআই তল্লাশি চালিয়েছে। আর নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করে যাচ্ছে সিবিআই।
এদিকে এখন নিজের বাড়িতেই নজরবন্দি বড়ঞার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। এই মামলার তদন্ত করতে শুক্রবার বিধায়কের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। আর তারপর থেকে একের পর এক নাটক সামনে আসতে থাকে। কখনও বাড়ির পাঁচিল টপকে পালানোর চেষ্টা, মোবাইল পুকুরে ফেলা এবং পুকুরের ধারে উদ্ধার হওয়া ৫টি ব্যাগ। পুকুরে চিরুনি তল্লাশি করেই মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। আর শনিবার সিবিআই প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়কের বাড়ির বাগান থেকে পাঁচ ব্যাগ নথি উদ্ধার হয়েছে। সূত্রের খবর, সেখানে প্রায় সাড়ে তিন হাজার চাকরিপ্রার্থীর নথি মিলেছে। ১০–১৫ লক্ষ টাকায় যাঁদের এক–একটি চাকরি বেচে ৫০০ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন করেছেন জীবনকৃষ্ণ।
কেমন করে উদ্ধার হল মোবাইল? অন্যদিকে আজ, রবিবার সকাল ৭টা ২০ মিনিটে ওই পুকুরের সব জল তুলে ফেলা সম্ভব হতেই বেরিয়ে আসে বিধায়কের একটি মোবাইল। আর একটি মোবাইল গোয়েন্দারা খুঁজে পেতেই আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন। আর এই কাজে সাহায্য করেন স্থানীয় চারজন শ্রমিক এবং এক মৎস্যজীবী। যদিও এই উদ্ধার হওয়া মোবাইল থেকে কতটা তথ্য মিলবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আর তাই সেটা সিবিআইয়ের প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞের হাতে দেওয়া হয়েছে। সারারাত বিধায়ককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন গোয়েন্দারা। আজ আবার নতুন করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তবে ওই বাড়িতেই যে নিয়োগ দুর্নীতি পরিচালনার ‘সেট আপ’ ছিল সেটা জানতে পেরেছে সিবিআই।
সিবিআইয়ের দাবি, মুর্শিদাবাদের রিজিওনাল এসএসসি চেয়ারম্যানের অফিসে বসে অযোগ্য প্রার্থীদের তালিকা তৈরি করতেন জীবনকৃষ্ণ। তাঁদের ওএমআর শিট আনিয়ে নষ্ট করে ফেলতেন। তারপর নিজেই নতুন করে ওএমআর শিট পূরণ করতেন। ২০১২ সাল থেকে তিনি এই কারবার চালান। পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার পর তাঁর দ্রুত শ্রীবৃদ্ধি ঘটে। পরে তাঁর মাথায় হাত রাখেন তৃণমূলের এক প্রভাবশালী নেতা।