ওএনজিসি তেলের সন্ধান পেতেই মাঠে নেমেছে তৃণমূল–সিপিএম। সিপিএমের দাবি এখানের সকলকে পুনর্বাসন এবং কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। তৃণমূলের দাবি, রাজ্য সরকার সাহায্য করেছিল। তাই রাজ্যের মানুষকে দেখা উচিত। উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে ওএনজিসি’র প্রকল্পে বাণিজ্যিকভাবে তেল উত্তোলনের সম্ভাবনা রয়েছে। সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহেই ইন্ডিয়ান অয়েলের (আইওসি) এক অনুষ্ঠানে কলকাতায় আসছেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়ামমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। বিধানসভা ভোটের আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাজ্য সফরে এলে ওই প্রকল্পকে তুরুপের তাস হিসেবে তুলে ধরবে রাজ্য বিজেপি। এমনকী এই প্রকল্পকে সামনে রেখে নির্বাচনী প্রচারও করা হবে।
সম্প্রতি মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের সভায় ওই তেল প্রকল্পে অগ্রগতির দাবি করে মন্ত্রী জানান, হলদিয়ার শোধনাগারে (ইন্ডিয়ান অয়েল) অশোকনগরে পাওয়া অশোধিত তেলের নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, তার পরিমাণ ৩০ কিলোলিটার। এবার তা নিশ্চিত হতেই রাজ্য সফরে আসতে চলেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। তিনি এসে কী বলেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে সবাই। কারণ বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন। তাই তিনি কি বার্তা দেন সেটা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
উল্লেখ্য, অশোধিত তেল সাধারণত দু’রকমের হয়— ‘সুইট’ ও ‘সাওয়ার’। সমস্ত শোধনাগারে, বিশেষ করে পুরনো শোধনাগার হলে দু’রকম তেল থেকেই অন্যান্য জ্বালানি তৈরির ব্যবস্থা থাকে না। কোথাও প্রথমটির প্রক্রিয়াকরণ সম্ভব, তো কোথাও দ্বিতীয়টির। আবার পারাদ্বীপ বা পানিপথে ইন্ডিয়ান অয়েল কিংবা জামনগরে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ়ের আধুনিক শোধনাগারে দু’টিরই প্রক্রিয়াকরণ সম্ভব। অশোকনগরের তেলের ধরন, মান ইত্যাদি নিয়ে আনুষঙ্গিক নানা পরীক্ষা–নিরীক্ষা চলছে। ২০০৯ সালে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস সন্ধানের জন্য অশোকনগরের ব্লকটি পায় ওএনজিসি। ২০১৪ সালে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ। ২০১৭ সালে তেল–গ্যাসের সম্পর্কে নিশ্চিত হয় সংস্থা।
ওএনজিসি সূত্রে খবর, তারা এখনও কোনও বার্তা তেল মন্ত্রকের থেকে পায়নি। ধর্মেন্দ্র প্রধান রাজ্য সফরে আসার ইচ্ছার কথা নিজেই জানিয়েছিলেন। ফলে আইওসি-র অনুষ্ঠানে এলে সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষায় উদ্যোগী হওয়ার কথা। তবে সেই সূত্রে রাজ্য বিজেপিও ভোটের আগে শিল্পায়নের হাওয়া তোলার সুযোগ পাবে। এই বাণিজ্যিকভাবে তেলের উৎপাদন শুরু হলে তা এই এলাকাই শুধু নয়, সার্বিক রাজ্যের আর্থিক উন্নয়নেও বিপুল গতি আনবে।