দুপুরের খাবার খেয়ে শুয়ে ছিল ৬ বছরের শিশুটি। তখন কার্টুন দেখছিল। কিন্তু বিকেলে দিদি যখন এসে ডাকাডাকি করছিল তখন ভাইয়ের শরীর ঠাণ্ডা বরফের মতো। তার মা বাইরে ছিলেন। বাড়ি ফিরে শিশুটির মা’ও একই অবস্থা দেখলেন। চন্দননগরের কুণ্ডুঘাট এলাকায় ওই শিশুর অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রহস্য দানা বেঁধেছে। বুধবারের ঘটনায় আজ, বৃহস্পতিবার পরিবারের লোকজন দাবি করছেন, দুপুরে চোর বাড়িতে এসে ছেলেকে মেরে দিয়েছে। শিশুটির গায়ে কম্বল ঢাকা দেওয়া ছিল। যা দেখে মনে হবে সে ঘুমাচ্ছে। কিন্তু গায়ে হাত দিয়ে দেখা যায় হাত–পা ঠাণ্ডা হয়ে গিয়েছে। ওই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এদিকে নবকুমার বিশ্বাস ও তনুশ্রী বিশ্বাসের ৬ বছরের ছেলে নিখিল অত্যন্ত প্রাণবন্ত ছিল বলেই স্থানীয় সূত্রে খবর। নবকুমার পেশায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাম্প অপারেটর। বুধবার সেখানে গিয়েছিলেন। দুপুরে ছেলেকে ঘরে রেখে বেরিয়েছিলেন মা। তনুশ্রীর দাবি, গতকাল নিখিলের দিদি গিয়েছিল পরীক্ষা দিতে। নবম শ্রেণির ছাত্রী। বিকালেফিরে এসে দেখে ভাই ঘুমোচ্ছে। ডাকাডাকি করলে সাড়া না দেওয়ায় গায়ে হাত দিয়ে দেখে হাত–পা শক্ত ঠাণ্ডা। চন্দননগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এটি অস্বাভাবিক মৃত্যু বলেই জানিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: নতুন বছরে মহানগরীতে সরবরাহ হবে গাড়ির সিএনজি গ্যাস, হেঁশেলে আসবে কবে?
অন্যদিকে অচৈতন্য হয়ে পড়ে থাকতে দেখে তড়িঘড়ি তনুশ্রী তাঁর স্বামীকে খবর দেন। তিনি সব কাজ ছেড়ে ছুটে আসেন। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। পুলিশ নিখিলের মা–বাবার সঙ্গে কথা বলেছে। তনুশ্রী জানান, ছেলে বমি করে ফেলেছিল। অথচ সকাল থেকে শরীর পুরোপুরি সুস্থ ছিল। যদিও কদিন ধরে ছেলে হঠাৎ করে চুপচাপ হয়ে যাচ্ছিল। ঠিক করেছিলেন বাবা–মা, কলকাতায় ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাবেন। নিখিলের বাবা নবকুমার বলেন, ‘ছেলের কোনও অসুখ ছিল না। কেমন করে এমন হল বুঝতে পারছি না। ময়নাতদন্ত হবে। আজ দেখছি, আলমারিতে চাবি ঝুলছে। স্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করলে ও বলল জানে না। আলমারি খুলে দেখি নগদ, গয়না কিছুই নেই। এখন আমাদের সন্দেহ হচ্ছে, কেউ বালিশ চাপা দিয়ে ছেলেটাকে মেরে দিয়েছে।’
এছাড়া পুলিশ সূত্রে খবর, অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে শিশুটির। মৃত শিশুর শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। কেমন করে মৃত্যু হল সেটা জানতে বৃহস্পতিবার ময়নাতদন্ত হবে চুঁচুড়ার ইমামবাড়া হাসপাতালে। গতকাল তনুশ্রী যখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন তখন গেট খোলা ছিল। তালা তিনি দেননি। ঘরে এইটুকু বাচ্চাকে একা রেখে বের হবার সময় খেয়াল রাখা উচিত ছিল। তনুশ্রীর স্বামীর দাবি, আগেও এরকম হয়েছে। ভিতরে একটা দরজায় তালা দেওয়া ছিল। কিছু ঘটেনি। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।