লোকসভা নির্বাচনের সময় জেলেই ছিলেন মাওবাদী নেতা ছত্রধর মাহাতো। তারপর জেল থেকে বেরিয়েই যোগ দেন তৃণমূলে। আর সঙ্গে সঙ্গেই রাজ্য কমিটির সদস্য। এই পরিস্থিতিতে গেরুয়া শিবির বুঝতে পেরেছে লোকসভা নির্বাচনে ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়া হলেও বিধানসভা নির্বাচনে তা হবে না। জঙ্গলমহলের একটা বড় অংশের ভোট ছত্রধর মাহাতোর হাত ধরেই হবে। তাই তাঁকে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসার আহ্বান জানানো হয়েছিল বলে খবর। এই পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আগেই মাঠে নামলেন ছত্রধর মাহাতো। সাংবাদিক বৈঠক করে জবাব দিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে।
সম্প্রতি গোপীবল্লভপুরে জগদ্ধাত্রী পুজোর অনুষ্ঠানে দিলীপকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘আপনি যে লড়াই মানুষের জন্য করেছেন, তার জন্য তিনি আপনাকে জেলে পাঠিয়েছিলেন। এখন ভোটের স্বার্থে আপনাকে জেল থেকে বের করে রাজ্য কমিটিতে নিয়ে, আপনার স্ত্রীকে চাকরি দিয়েছেন। আপনি আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন, এটা জঙ্গলমহলের আদিবাসী–মাহাতো মানুষ মানবে না। আসুন, বিজেপি সম্মান দেবে।’ আসলে এখানেও বিজেপি নির্বাচনের বৈতরণী পার করতেই এই কথা বলেছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।
দিলীপের আহ্বানের জবাব ছত্রধরই দিলেন ঝাড়গ্রাম শহরের রূপছায়া মোড়ের দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে। তৃণমূল রাজ্য সম্পাদক ছত্রধর দলের জেলা ও যুব নেতাদের পাশে বসিয়ে বললেন, ‘দিলীপবাবুরা ইতিহাস ভুলে যান। কয়েকমাস আগেও তিনি ও তাঁর দলের মেজ ও ছোট নেতারাও আমার বিরুদ্ধে মাওবাদী অ্যাখ্যা দিয়েছেন। দিলীপবাবুরা জানেন না, আমাকে তৎকালীন বাম সরকার মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পুরেছিল। বাম সরকারে যাঁরা প্রতিনিধিত্ব করেছেন, তাঁদের অনেকেই এখন জার্সি পাল্টে গেরুয়া জার্সি পরে বিজেপিতে এসে সন্ত্রাস সৃষ্টির চেষ্টা করছেন।’
জনসাধারণের কমিটির নেতা এদিন অবশ্য জানান, তিনি চিরকালই সিপিএম বিরোধী। বর্তমান প্রেক্ষিতে তাঁকে রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে আসার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ। কেন সাংবাদিক বৈঠক করে দিলীপের জবাব দিচ্ছেন? ছত্রধরের ব্যাখ্যা, কর্মীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। তিনিও চান ওই সমাজের সমৃদ্ধি। কুড়মিদের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী কী করেছেন তার ফিরিস্তি দিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক বলেন, ‘বিভিন্ন ধরনের আবেদন আসছে। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে যতটুকু করণীয় দিদি নিশ্চয়ই করবেন। এই বিশ্বাস আমার আছে।’