বিগত দিনে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতার নিয়ে ঝামেলা হয়েছে একাধিক জায়গায়। বিএসএফ-কে কাজে বাধা দিতে দেখা গিয়েছে বিজিবিকে। এদিকে সীমান্তে দুই দেশের নাগরিকদেরও ঝামেলায় জড়াতে দেখা গিয়েছে সম্প্রতি। এই আবহে মালদায় গিয়ে সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরামর্শ দিলেন, 'বাংলাদেশিদের সঙ্গে বিএসএফ-এর বচসা হলে তাতে আপনারা জড়াতে যাবেন না'। (আরও পড়ুন: সুপ্রিম নিষেধাজ্ঞার আগে পর্যন্ত ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে কত কোটি বন্ড অনুদান পায় TMC?)
আরও পড়ুন: কথা দিয়েছিলেন মমতা, আরজি কর মামলায় সঞ্জয়ের ফাঁসি চেয়ে হাই কোর্টে গেল রাজ্য সরকার
আজ মালদায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'ওপার বাংলায় একটু সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু বর্ডার দেখার দায়িত্ব বিএসএফ-এর। যদি এখানে কোনও অন্যায় হয় আমরা দেখে নেব। কিন্তু বিএসএফ-এর সঙ্গে ওদের বচসা হলে আপনারা সেখানে যাবেন না। পুলিশকে বলব, মাইকে ঘোষণা করে ভারতের লোকজনদের সেখান থেকে সরে আসতে বলবেন। বাদবাকি প্রশাসন দেখে নেবে। আমি বিশ্বাস করি, একদিন হয়ত আমাদের সম্পর্ক আবার ভালো হয়ে যাবে। কিন্তু লক্ষ্য রাখবেন, কোনও সমাজবিরোধী বা জঙ্গি যাতে কারও বাড়ি বা হোটেল ভাড়া নিয়ে বাসা না বাঁধতে পারে। কোনও সমাজবিরোধী যেন এখানে ঘুঘুর বাসা বানাতে না পারে। তাহলে তা দেশের ক্ষতি, সমাজের ক্ষতি, রাজ্যের ক্ষতি। শান্তি ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়।' এর আগে গতকাল মালদাতেও প্রায় একই বার্তা দিয়েছিলেন মমতা।
আরও পড়ুন: পোর্সোনাল লোন নেবেন? কোন ব্যাঙ্কের ব্যক্তিগত ঋণে EMI সবচেয়ে কম? জানুন বিশদ
উল্লেখ্য, গত ১৮ জানুয়ারি মালদায় ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে বাংলাদেশিরা চড়াও হয়েছিল বলে অভিযোগ। সেই সময় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের রুখে দিয়েছিল বিএসএফ। তবে মালদার সুকদেবপুরে এখনও পরিস্থিতি থমথমে। এই আবহে গ্রামবাসীদের সীমান্তের দিকে যাওয়ার ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। গ্রামবাসীদের সংযত থাকার পরামর্শ দিয়েছে বিএসএফ। এদিকে সুকদেবপুরবাসীদের অভিযোগ, ইউনুস জমানাতেই বাংলাদেশিরা ভারতীয় ভূখণ্ডে এসে লুটপাট চালাতে শুরু করেছে। এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিএসএফের ১১৯ নং ব্যাটেলিয়নের জওয়ানরা টানা টহল দিয়ে চলেছেন সীমান্ত এলাকায়। এর আগে গত ১৮ জানুয়ারির ঘটনায় বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ রুখতে সেখানে কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটানো হয়। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি জখম হন বলেও দাবি করা হয়েছিল। এদিকে সুকদেবপুরের পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের ভগবনগোলাতেও নাকি সম্প্রতি বাংলাদেশিরা সীমান্ত পার করে এসে ভারতীয় ভূখণ্ড থেকে ফসল কেটে নিয়ে গিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল।
প্রসঙ্গত, বিগত বেশ কয়েকদিন ধরেই সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়া নিয়ে সংঘাত দেখা গিয়েছে বিএসএফ এবং বিজিবির মধ্যে। এই আবহে একধিক জায়গায় ভারতীয় ভূখণ্ডের কাঁটাতার দিতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ছে বিএসএফ। এর জেরে সীমান্তের বহু জায়গায় ছড়িয়েছে উত্তেজনা। এই ইস্যুতে বাংলাদেশের দাবি, ১৯৭৫ সালে যে আন্তর্জাতিক সীমান্ত চুকি দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল, তা অনুযায়ী, সীমান্তের জিরো পয়েন্ট থেকে ১৫০ গজ ভিতরে 'প্রতিরক্ষা কাঠামো' তৈরি করা যাবে। এদিকে ২০১০ সালে অবশ্য বাংলাদেশ ভারতকে লিখিত আকারে অনুমতি দিয়েছিল যে সীমান্তে ১৫০ গজের ভিতরেও প্রয়োজনে কাঁটাতারের বেড়া দিতে পারবে ভারত। এই কথা নিজে স্বীকার করেছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী।