সাপে কামড়েছিল শিশুকে। তা জানার পরেও চিকিৎসকের দ্বারস্থ না হয়ে ওঝার দ্বারস্থ হয়েছিলেন পরিবার। আর তার খেসারত দিতে হল পরিবারকে। একবিংশ শতাব্দীতেও পরিবারের কুসংস্কারের জেরে কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হল শিশুর। নদিয়ার পলাশীর ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং মহকুমায়। সাপের কামড়ে মৃত্যু হল এক তিন বছরের শিশু কন্যার। মৃত শিশুর নাম ঋতু বর্মন।
বৃহস্পতিবার ভোরে পরিবারের সদস্যরা তাকে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বাসন্তী থানার অন্তর্গত রানীগড় গ্রামের বাসিন্দা ঋতু। বুধবার রাতে খাওয়া দাওয়া করে বাবা মায়ের সঙ্গেই ঘুমিয়েছিল। কিন্তু, গভীর রাতে যন্ত্রণা অনুভব করে ঘুম থেকে উঠেই চিৎকার শুরু করে ওই শিশুটি। রাত দেড়টা নাগাদ তার ঘুম ভেঙে যায়। তার বাবা জয়দেব বর্মন দেখেন বিছানায় একটি কালাজ সাপ রয়েছে। তড়িঘড়ি তিনি সাপটিকে মেরে ফেলেন। এরপর তারা মেয়েকে নিয়ে স্থানীয় এক ওঝার কাছে যান। সেখানে দীর্ঘ সময় নষ্ট হয়। শেষ পর্যন্ত অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে বাসন্তী ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসার পর ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন। কিন্তু সেখানে নিয়ে আসার পথেই মৃত্যু হয় ঋতুর। এই ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
ক্যানিং হাসপাতালের চিকিৎসক সমরেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ‘সাপে কামড়ানোর পরেও ওষুধ দিয়ে শিশুটিকে বাঁচানো যেত। কিন্তু, ওঝার কাছে নিয়ে যাওয়ার ফলে দীর্ঘ সময় নষ্ট হওয়ায় শিশুকে বাঁচানোর মতো সময় ছিল না।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এবছর পঞ্চাশটি সাপে কামড়ানো রোগী পেয়েছি। কিন্তু, তার মধ্যে দশ শতাংশ রোগী ওঝার দ্বারস্থ হয়েছিলেন।’ তাই সাপে কামড়ানো রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।