ছেলে ভারতে থেকে যেতে বলছেন। মেয়ে একাধিকবার বলেছেন যে কানাডায় চলে যেতে। কিন্তু লড়াইয়ের পথটা ছাড়তে চান না চিন্ময় কৃষ্ণদাসের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ। বরং হিন্দু সন্ন্যাসী তথা সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় প্রভুর জন্য লড়াই করতে বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন ৭৫ বছরের আইনজীবী। যদিও বাবার সেই নাছোড়বান্দা এবং লড়াকু মনোভাবের জেরে উদ্বেগ্নে ভুগছেন ছেলে রাহুল। উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরের বাসিন্দা জানিয়েছেন, আপাতত যা পরিস্থিতি, তাতে তিনি চান যে বাবা আপাতত যেন ভারতেই থাকেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তবেই বাবাকে দেশে ফেরার কথা ভাবতে বলেছেন রাহুল। যিনি বাংলাদেশে বাবার সুরক্ষা রীতিমতো উদ্বেগে ভুগছেন।
ভারতে থেকে যাওয়ার আর্জি ছেলের
সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাহুব জানিয়েছেন যে বাবা-মা যখন বাংলাদেশে ছিলেন, তখন লাগাতার যোগাযোগ রেখে যাচ্ছিলেন। চট্টগ্রামে মৌলবাদীদের হুমকির পরে বাবা অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু মূল সমস্যাটা হল যে চট্টগ্রামে না হয় পুলিশি নিরাপত্তা থাকছে। কিন্তু ঢাকায় যেখানে বাবার বাড়ি, সেখানে তো পুরোপুরি সুরক্ষার অভাব আছে। সেজন্যই আপাতত বর্ষীয়ান আইনজীবীকে ভারতেই থেকে যাওয়ার আর্জি জানিয়েছেন ছেলে।
বছর শেষের আগেই বাংলাদেশে ফিরবেনয
যদিও তাতে রাজি নন বর্ষীয়ান আইনজীবী। চিকিৎসার জন্য স্ত্রীয়ের সঙ্গে ভারতে এসে ব্যারাকপুরে থাকলেও কয়েকদিন পরেই বাংলাদেশে ফিরে যাবেন বলে জানিয়েছেন। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে আসার সময় বাংলাদেশে বন্ধু এবং সহকর্মীদের আশ্বাস দিয়ে এসেছেন যে বছর শেষ হওয়ার আগেই ফিরে যাবেন। অর্থাৎ নয়া বছরের শুরুতেই চিন্ময় প্রভুর জামিন মামলার শুনানির আগে চলে যাবেন বাংলাদেশে।
বাবার সেই নাছোড়াবান্দা মনোভাবে উদ্বিগ্ন হলেও অবাক নন রাহুল। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, তিনি জানিয়েছেন যে তাঁর বাবা অত্যন্ত আদর্শবাদী মানুষ। এমনকী তাঁরাও হুমকিবার্তায় অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছেন। নিজের আদর্শে অবিচল থেকে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য বাবাকে সেই মূল্য চোকাতে হয় বলে আক্ষেপ করেছেন রাহুল।
সন্ন্যাসীর হয়ে লড়াইয়ের বার্তা
আর সেই আদর্শের প্রতি অবিচল থেকেই ওই সংবাদমাধ্যমে বর্ষীয়ান আইনজীবী বলেছেন, 'আমায় এবং আমার স্ত্রী'কে কানাডায় চলে যাওয়ার জন্য অনেকবার বলেছে মেয়ে। কিন্তু কেন আমি আমার মাতৃভূমি এবং শোষিতদের ছেড়ে চলে যাব? সন্ন্যাসীর হয়ে লড়াইয়ের জন্য আমি অনেক স্থানীয় আইনজীবীর কাছে আর্জি জানিয়েছি। কিন্তু কোনও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এই বয়সে আমার পক্ষে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়া আমার পক্ষে কঠিন। আমরা হাইকোর্টে আবেদন করব, যাতে মামলাটি ঢাকায় সরিয়ে আনা হয়।'