জল চুরির অভিযোগ বারবার উঠেছিল। তার জন্য পদক্ষেপও করা হয়েছিল। কিন্তু চুরির অভ্যাস পাল্টানো যায়নি। এবার গ্রামে পানীয় জলের অপচয় এবং চুরি ঠেকাতে মাঠে নামলেন খোদ তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক। জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের দিচ্ছে জলের সংযোগ। আর তার বাইরে অবৈধভাবে কানেকশন যুক্ত করা হচ্ছে। এই অভিযোগ কানে যায় বিধায়কের। আর তারপরই হাতেনাতে ধরতে রবিবাসরীয় ছুটির দিনে চুঁচুড়ার কোদালিয়া–১ গ্রাম পঞ্চায়েতের রবীন্দ্রনগর–১ কলোনি এলাকায় উপস্থিত হন বিধায়ক অসিত মজুমদার। সঙ্গে নিয়ে আসেন কোদালিয়া থানার ওসি, পিএইচই ইঞ্জিনিয়ার এবং কর্মীদের। তারপর ধরে ধরে ১৫টি অবৈধ জলের লাইন নিজে দাঁড়িয়ে থেকে কাটিয়ে দেন তিনি। আর কেউ অবৈধ পথে জলের লাইন নিলে এফআইআর করা হবে বলে কড়া হুঁশিয়ারি দেন বিধায়ক।
এদিকে সম্প্রতি পানীয় জল চুরির অভিযোগ পেয়ে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই জল চুরি ধরলেন চুঁচুড়ার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক। বেআইনি পিএইচই লাইন তো কাটলেনই সঙ্গে দিয়ে গেলেন কড়া বার্তাও। তবে চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদারের এই কাজে এলাকাবাসী অত্যন্ত খুশি হয়েছেন। পঞ্চায়েতের অফিসারদের ডেকে পাঠিয়ে বেআইনি কানেকশন কেটে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে কয়েকটি বাড়ি থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। এমনকী একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানেও এমন কাজ হচ্ছে দেখে রেগে যান বিধায়ক অসিত।
আরও পড়ুন: ডায়মন্ডহারবারে মজুত বাজি বিস্ফোরণে মৃত্যু কিশোরের, ভিলেজ পুলিশের অবৈধ কারবার
অন্যদিকে রবীন্দ্রনগর এলাকা–সহ নানা জায়গায় মানুষ অবৈধ সংযোগ করে জল নিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠে। একাধিক দোকানদার বেআইনিভাবে জল নিচ্ছেন। একটা বাড়িতে একটা সংযোগ থাকার কথা। সেখানে তিন চারটি সংযোগ করে পাম্পের মাধ্যমে রিজার্ভারে জল তুলে নিচ্ছে বলে অভিযোগ আসে বিধায়কের কাছে। এই বিষয়ে বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, ‘পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে নয় থেকে দশটি পাম্প করা হয়েছে। তারপরও কেন মানুষের ঘরে জল পৌঁছাচ্ছে না, সেটা দেখতে বেরিয়েছিলাম। বহু মানুষ একের বেশি কানেকশন নিয়েছে। এদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর দরকারে এফআইআর করা হবে।’
এছাড়া কয়েকজন বাসিন্দার দাবি, নিয়ম মেনে বাড়ির দুটি ইলেকট্রিক বিল দেখিয়েই কানেকশন নিয়েছেন তাঁরা। অবৈধভাবে ব্যবহার করেন না। আবার পাম্প অপারেটরদের দাবি, পাম্পের যা প্রেসার আছে তাতে গোটা পঞ্চায়েত এলাকা চলে যাওয়ার কথা। তবে কিছু জায়গায় অবৈধভাবে কানেকশন নেওয়া এবং ট্যাঙ্কে জল তোলার কারণে জল পৌঁছচ্ছে না বলে অভিযোগ। তবে বিধায়ক অসিত মজুমদারের বক্তব্য, ‘প্রত্যেকটি মানুষের ঘরে যাতে জল পৌঁছয় সেটা পিএইচই দেখছে। কিন্তু বহু মানুষ আছেন, যাঁরা নিজের আখের গোছাতে বাকিদের সমস্যা ফেলছেন। নিজের ঘরে জল ভরে, অন্যকে বঞ্চিত করছেন। এই জলপ্রকল্পের কাজ নিয়ে সম্প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই নিয়ম বহির্ভূত কোনও কাজ সহ্য করা হবে না।’