কয়েকদিন ধরেই খবরে উঠে আসছিল উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া। এক মহিলা ও এক পুরুষকে ভরা রাস্তায় মারধরের ঘটনায় পুলিশ গ্রেফতার করেছে জেসিবি ওরফে তাজেমুল ইসলামকে। তারপরও দুষ্কৃতীদের দৌরাত্ম্য থামেনি। এবার চোপড়ায় অভিযানে গিয়ে আক্রান্ত হলেন চার পুলিশকর্মী। তাঁদের উপর ধারাল অস্ত্র নিয়ে হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম চার পুলিশকর্মী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মাঝরাতের এই ঘটনার নেপথ্যে কারা আছে? সেটার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আগে কুলতলিতে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অভিযান নেমে আক্রান্ত হয়েছিল পুলিশ। এবার হামলার ঘটনাস্থল উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া। আক্রান্ত পুলিশকর্মীদের শিলিগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, চোপড়ার আমতলা এলাকায় এক দুষ্কৃতীকে ধরতে গিয়েছিল পুলিশের দল। ওই দুষ্কৃতীর বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ আছে। অভিযুক্তের বাড়ির কাছে তল্লাশি করতে যেতেই পুলিশের উপরে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। এই হামলার ঘটনায় পুলিশের দুই অফিসার, এক কনস্টেবল এবং একজন গাড়ির চালক গুরুতর জখম হয়েছেন বলে অভিযোগ। তবে এই ঘটনার নেপথ্যে জেসিবি বাহিনী আছে কিনা সেটা এখনও স্পষ্ট নয়। আহত পুলিশ কর্মীদের উদ্ধার করে শিলিগুড়ি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই এলাকার তিনজনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় ওয়ারেন্ট ছিল। কিন্তু আগে তারা পালিয়ে যাওয়ায় পুলিশ ধরতে পারেনি। তিন অভিযুক্ত গ্রামে ফিরেছে, জানতে পেরেই ভোররাতে অভিযান চালায় পুলিশ।
আরও পড়ুন: মালদায় চলছে তৃণমূল কংগ্রেসের ‘শুদ্ধিকরণ’, মুখ্যমন্ত্রীর ছবি হাতে মানুষের দুয়ারে কাউন্সিলর
অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, এই দুষ্কৃতীর নাম দিল মহম্মদ। তার বাড়িতেই তল্লাশিতে গিয়েছিল পুলিশ। দিল মহম্মদ ও তাঁর ছেলেরা সুদের কারবার চালায়। এক ব্যক্তি টাকা ধার নিয়ে ফেরত দিচ্ছিল না বলে ওই ব্যক্তিকে অপহরণ করে দিল মহম্মদের দলবল। সেই অপহরণের অভিযোগেই আমতলা এলাকায় অভিযানে যায় পুলিশ। তখনই পুলিশের উপর চড়াও হয় তিন অভিযুক্ত এবং তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা। দু’জনকে কোপানো হয়। এক কনস্টেবলকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। রাস্তার পাশে থাকা গাড়ি থেকে চালককে নামিয়ে এনে মারধর করা হয়।
এছাড়া এসআই পবিত্র কুণ্ডুর পেটে ছুরি মারা হয় নির্মমভাবে বলে অভিযোগ। ওই এএসআই দেবাশিস দাসের হাতে কোপানো হয়েছে। এই বিষয়ে ইসলামপুরের পুলিশ সুপার জবি থমাস বলেন, ‘এলাকায় পুলিশের অভিযান চলছে। একাধিক ফাঁড়ি থেকে পুলিশ জড়ো হয়েছে। এখানে নানা অনৈতিক কাজ হয়। যা একেবারেই বরদাস্ত করা হবে না।’ এখন ওই তিনজন দুষ্কৃতী কোথায় গা–ঢাকা দিয়েছে তা খুঁজছে পুলিশ। আর পুলিশের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় আরও জোরদার তল্লাশি চলছে।