ধর্ম যার যার উৎসব সবার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কথা নানা সভা, সমাবেশ এবং উৎসবের সময় বলে থাকেন। এবার সেটাই দেখা গেল শান্তিনিকেতনে। একদিকে পৌষমেলা নিয়ে সকলে ব্যস্ত। তখন অপরদিকে বড়দিনের উৎসব ধুমধাম করে পালিত হল শান্তিনিকেতনে। আর এই উৎসবকে কেন্দ্র করে যে অনুষ্ঠান হল তাতে জমজমাট পরিবেশ তৈরি হয় শান্তিনিকেতনে। বুধবার বড়দিনের সন্ধ্যায় আলোর রোশনাই ও গানে খ্রিস্টোৎসব বড় আকারে উদযাপিত হয় শান্তিনিকেতনে। এই প্রথমবার উপাসনা গৃহে প্রবেশের সুযোগ পেলেন পর্যটকরা। আর তাতেই যেন বড়দিন সার্থক হল। আনন্দিত পর্যটকরা।
গোটা রাজ্যই ক্রিসমাস সেলিব্রেশনে মেতে উঠেছিল। কিন্তু কলকাতার পার্ক স্ট্রিটের বাইরেও যে বড়দিন এভাবে পালিত হয় সেটাও জানা দরকার। যাঁরা পৌষমেলা উপলক্ষ্যে শান্তিনিকেতন সফরে গিয়েছিলেন, তাঁরা এই বড়দিন প্রত্যক্ষ করে আনন্দ উপভোগ করেছেন। শান্তিনিকেতনের উপাসনা গৃহে উপনিষদের মন্ত্র উচ্চারণ এবং রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করে যীশুর জন্মদিন পালন করা হয়। সেজে ওঠে গোটা শান্তিনিকেতন। বড়দিনের উৎসবে সমবেতভাবে ‘একদিন যারা মেরেছিল তারে গিয়ে’ গাওয়া হয়। আর পাঠ করা হয় বিশ্বকবির লেখা। এখানে পাঠ করা হয় বাইবেলের অংশবিশেষও।
আরও পড়ুন: ডোরিনা ক্রসিংয়ের নাম পাল্টে ‘অভয়া ক্রসিং’ করার আর্জি, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি চিকিৎসকদের
শান্তিনিকেতনে সারা বছরই পর্যটকদের ভিড় থাকে। দেশ–বিদেশ থেকে এখানে এসে থাকেন পর্যটকরা। রাজ্যের মানুষ তো থাকেনই। বিদেশি পর্যটকদের কাছে টেগোরস ল্যান্ড বলে পরিচিত এই শান্তিনিকেতন। সেখানে বড়দিন উদযাপন দেখে অনেকেই উৎসাহিত হয়ে প্রবেশ করেন। এখানে দেখা যায়— উপাসনা গৃহকে মোমবাতি, প্রদীপ দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। তার সঙ্গে আলোকসজ্জা ও গান আলাদা মাত্রা যোগ করে। এভাবেই উদযাপিত হয় খ্রীস্টোৎসব ৷ প্রথা অনুযায়ী ঐতিহ্যবাহী উপাসনা গৃহেই শুরু হয় খ্রিস্টোৎসব।
এই বছর যে লক্ষ্য করা গেল সেটা হল, প্রথমবার দূরদূরান্ত থেকে পর্যটকরা খ্রিস্টোৎসব দেখতে উপাসনা গৃহে ঢোকার সুযোগ পেলেন। আর এটা যেন একটা বাড়তি পাওনা। তাই অত্যন্ত আনন্দিত হন পর্যটকরা। এই বড়দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য বিনয় কুমার সোরেন, প্রাক্তন উপাচার্য সবুজকলি সেন, সভাধিপতি কাজল শেখ এবং পড়ুয়ারা। বহু প্রাক্তনী এবং প্রবীণ আশ্রমিকরাও অংশ নেন।