মন্ত্রী জাকির হোসেনের ওপর হামলার তদন্তভার নিল সিআইডি। নিমতিতায় যাচ্ছে সিআইডি আধিকারিক এবং ফরেন্সিক দল। বিধানসভা নির্বাচন দোরগোড়ায় আসতেই রাজ্যে হিংসা বাড়তে শুরু করেছে। কখনও সে অভিযোগ উঠছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তো কখনও বিজেপির বিরুদ্ধে। এই পরিস্থিতিতে মন্ত্রীকে লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়া হল কেন? তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এমনকী এই ঘটনার পিছনে কার হাত রয়েছে তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এদিকে বোমার আঘাতে জখম মন্ত্রী জাকির হোসেনকে আজ নিয়ে আসা হয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁর বাঁ–পায়ের হাঁটু থেকে গোড়ালি পর্যন্ত একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। স্প্লিন্টারের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে বাঁ–পায়ের নীচের অংশ। গোড়ালির হাড় ভেঙেছে। ঝলসে গিয়েছে পায়ের অনেকটা অংশ এবং উড়ে গিয়েছে হাতের একটি আঙুল। জাকিরকে দেখতে এসএসকেএমে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, কলকাতায় আসবেন বলে বুধবার রাতে রওনা হয়েছিলেন জাকির। নিমতিতা থেকে তাঁর তিস্তা–তোর্সা এক্সপ্রেস ধরার কথা ছিল। গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে তিনি ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মেও যান। তখন জাকিরকে ঘিরে ছিলেন দলীয় কর্মী, সমর্থক এবং অনুগামীরা। মোবাইলে ভিডিয়ো রেকর্ডিং করছিলেন কয়েকজন। সেই ভিডিয়োতে ধরা পড়েছে, রাজ্যের মন্ত্রীর উপর বোমা হামলার দৃশ্য। দেখা গিয়েছে, গাড়ি থেকে নেমে কর্মী–সমর্থক নিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন জাকির। জয়ধ্বনির পাশাপাশি দলীয় স্লোগান চলছিল। আচমকা ভিডিও জুড়ে প্রবল বিস্ফোরণ। ঘটনার আকস্মিকতা কাটতেই দেখা যায়, এদিক–ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে সকলে। রক্তাক্ত স্টেশন প্ল্যাটফর্ম।
স্টেশন চত্বরে বোমা রাখা ছিল কিনা, তা আজ (বৃহস্পতিবার) সিআইডির ফরেন্সিক দল তদন্ত করে দেখবে। যে প্ল্যাটফর্মে ঘটনাটি ঘটে, সেখানে কোনও সিসিটিভি নেই। সেই সুযোগ নেওয়া হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। কাজেই তথ্য জোগাড় করতে সময় লাগবে। বৃহস্পতিবার সকালেই ঘটনাস্থলে তদন্তে যায় বম্ব স্কোয়াডও।
এই ঘটনা নিয়ে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, ‘মন্ত্রী জাকির হোসেনের উপর হামলা চালানো হয়েছে। আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি। ঘটনাস্থলে বম্ব স্কোয়াডের দল যাচ্ছে।’ তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের মন্ত্রীর উপর পূর্ব পরিকল্পিতভাবেই হামলা চালানো হয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, ‘জাকির তৃণমূল কংগ্রেসে এক ব্যতিক্রমী ব্যক্তিত্ব। পরিশ্রম এবং বুদ্ধির জোরে একজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতি এবং মানুষের বন্ধু। এই ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে শাস্তি দেওয়া উচিত।’