আজ, শুক্রবার হুগলির কামারকুণ্ডু রেলব্রিজের উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিঙ্গুরের মঞ্চে ভার্চুয়ালি এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তিনি। আর তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি করেন হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। যা উড়িয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একইসঙ্গে সিঙ্গুরে শিল্প আসছে বলেও এদিন ঘোষণা করেন তিনি।
ঠিক কী দাবি বিজেপি সাংসদের? এদিন তাঁকে কেন ডাকা হয়নি? তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিজেপি সাংসদ। তারপর তিনি এদিন টুইট করে লেখেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যিনি সবসময় যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে ভেঙে ফেলা হচ্ছে বলে ভাষণ দেন, তিনি কামারকুণ্ডু সড়ক উড়ালপুল উদ্বোধনের সময় কেন্দ্রীয় সরকারের বা রেলের কোনও প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানাননি। পুরো প্রকল্পে নিজের স্টিকার লাগিয়ে দিলেন। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে কে ভাঙছে?’ আর মুখ্যমন্ত্রী কারও নাম উল্লেখ না করে জানান, রেলমন্ত্রী থাকাকালীন এই প্রকল্পের কথা চূড়ান্ত হয়েছিল। রাজ্য সরকার জমি এবং টাকার সিংহভাগ দিয়েছে।
ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? এদিন রেল প্রকল্পের উদ্বোধনের আগে দেবী সন্তোষীর মন্দিরে পুজো দেন মুখ্যমন্ত্রী। বেশ কয়েকজন শিশুকে খাবার দেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের নানা মন্দিরের সৌন্দর্যায়নের কাজ চলছে বলে জানান তিনি। পুরীর আদলে জগন্নাথ মন্দির তৈরি হচ্ছে দিঘায়। তিনি বলেন, ‘সিঙ্গুরে জমি আন্দোলনের সময় ২৬ দিন অনশনে বসেছিলাম। যেদিন প্রথম আন্দোলন শুরু হয় সেদিন সন্তোষী মায়ের কাছে মানত করেছিলাম। যদি জমি আন্দোলনে কৃষকরা জয়ী হয় তাহলে একটা মন্দির তৈরি করব। মায়ের ব্রত করব।’
কী উঠে এল তাঁর স্মৃতিতে? সিঙ্গুর নিয়ে কথা বলতে গিয়ে স্মৃতিতে জড়িয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমাকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। ইসলামপুর থেকে ফেরার পথে আমাকে আটকে দেওয়া হয়েছিল। ডানকুনির পেট্রল পাম্পে অকল্পনীয় অত্যাচার করা হয়েছিল। সবাই দুর্গাপুজোর আনন্দে মেতেছিলেন, কিন্তু আমার তখন রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। সেই দিনগুলি আমি ভুলতে পারি না, ভুলতে চাই না।’
শিল্প নিয়ে কী বার্তা দিলেন? সিঙ্গুরে শিল্প এবং কৃষির যৌথ উন্নয়নের কথা বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ তিনি বলেন, ‘আপনারা জমি ফেরত পেয়েছেন। এখানে কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ হচ্ছে। একদিকে সবুজ জমি, অন্যদিকে শিল্প—সিঙ্গুরের উন্নয়নের জন্য যাবতীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। কোচ ফ্যাক্টরি হচ্ছে উত্তরপাড়ায়। হিন্দমোটর্সে কারখানা হচ্ছে। ডানকুনিতে ফ্রেট করিডর।’