বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে বিরাট ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়ে দিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘায় নবনির্মিত জগন্নাথ মন্দিরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের দিনক্ষণ!
বুধবার বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, আগামী ২৯ এপ্রিল (২০২৫) দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন করা হবে। তিথি অনুসারে, অক্ষয় তৃতীয়ার একদিন আগেই মন্দিরের দরজা খুলে যাবে।
স্বাভাবিকভাবেই এই ঘোষণা প্রভু জগন্নাথের ভক্তবৃন্দ এবং সাধারণ পর্যটক - দুই পক্ষের কাছেই বিরাট পাওয়া। এত দিন তাঁরা সকলেই অপেক্ষায় ছিলেন, কবে চাক্ষুষ করা যাবে সেই মন্দির? কবে ঢোকা যাবে মন্দিরের অন্দরে? কবেই বা পুজো দেওয়া যাবে প্রভু জগন্নাথের নামে?
মমতার এদিনের ঘোষণায় ভক্ত, পুণ্যার্থী ও পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারাও খুশি হবেন বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১১ ডিসেম্বর দিঘা সফরে এসে নির্মীয়মান জগন্নাথ মন্দির পরিদর্শনে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। সেই সময়েই তিনি জানিয়েছিলেন, ২০২৫ সালের এপ্রিলের মধ্যেই মন্দিরের দরজা আমজনতার জন্য খুলে দেওয়া হবে। বুধবার বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে সেই প্রতিশ্রুতি মতোই মন্দির উদ্বোধনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এছাড়াও, মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ২০২৫ সালের রথযাত্রার অনুষ্ঠানে সামিল হতে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে আসবেন তিনি। সেক্ষেত্রে অক্ষয় তৃতীয়ার আগে মন্দিরের উদ্বোধন হয়ে গেলে সেখানে পরবর্তীতে রথযাত্রাও পালন করতে পারবেন মমতা।
প্রসঙ্গত, দিঘার এই জগন্নাথ মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে পুরীর জগন্নাথের মন্দিরের আদলে। প্রায় ২২ একর জমির উপর গড়ে উঠেছে বিশাল ও বিরাট মন্দির চত্বর। যার জন্য খরচ করা হয়েছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মন্দির নির্মাণের কথা ঘোষণা করেছিলেন ২০১৮ সালে। তাঁর সরকারের সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করেছে হিডকো। সূত্রের দাবি, ওডিশার পুরীর মন্দিরের নিয়ম ও প্রথা মেনেই দিঘার জগন্নাথ মন্দিরেও রথযাত্রার আয়োজন করা হবে।
প্রত্যেক বছর রথযাত্রার সময় পুরীতে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রার রথ বেরোনোর আগে সোনার ঝাঁটা দিয়ে রাস্তা ঝাঁট দেওয়া হয়। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরেও সেই প্রথা পালন করা হবে। এমনকী, এই সোনার ঝাঁটা তৈরির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৫ লক্ষ টাকা দান করবেন বলেও জানিয়েছিলেন।
আগামী দিনে দিঘার মন্দির পরিচালনার কাজ যাতে সুষ্ঠুভাবে সারা সম্ভব হয়, তা নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যেই একটি অছি পরিষদ বা ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়।
সেই ট্রাস্টি বোর্ডের নেতৃত্বে রয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। এছাড়াও রয়েছেন চারজন হিন্দু প্রতিনিধি, পুরীর মন্দিরের পাঁচ প্রতিনিধি এবং স্থানীয় চারজন পুরোহিত।