গত বছর বাড়িতে কালীপুজোর সময় খুন্তি হাতে খিচুড়ি রাঁধতে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বুধবার ফের খুন্তি হাতে নিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এদিন বোলপুর থেকে ফেরার পথে স্থানীয় বল্লভপুরডাঙা গ্রামে এক চায়ের দোকানে গিয়ে দোকানির কাছে জেনে নেন কী রান্না হচ্ছে। এর পরই তাঁকে দেখা যায় খুন্তি নাড়তে। চায়ের দোকানের ওই মহিলার সঙ্গে নানা বিষয়ে কথাও বলেন তিনি। জানতে চান স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড পেয়েছেন কিনা।
বোলপুরের রাজনৈতিক কর্মসূচি সেরে এদিন ফেরার পথে গ্রামবাসীদের সঙ্গে মিশে গেলেন জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার বল্লভপুরডাঙা গ্রামের শেষ প্রান্তে থাকা হেলিপ্যাডের উদ্দেশে যাওয়ার পথে আচমকা গাড়ি থেকে নেমে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। বেশ কিছুক্ষণ গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। হাতের কাছে মুখ্যমন্ত্রীকে পেয়ে নানা অভিযোগ করেন গ্রামবাসীরা। গ্রামে রয়েছে পানীয় জলের সমস্যা, রাস্তাও বেহাল। সেই কথাও জানান তাঁরা। পাশে ছিলেন জেলাশাসক। ছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলও। ক্ষোভ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এর পরই তিনি গ্রামবাসীদের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে এগিয়ে যান গ্রামের মোড়ের দিকে। সেখানে পাশাপাশি দুটি চায়ের দোকান। একটি বাবু বাগদি ও মেনকা বাগদির। এবং আর একটি চন্দনা বাগদির। প্রথমে মেনকার দোকানে ঢুকে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। আলু, বরবটি দিয়ে পাঁচমিশালি একটা তরকারি রান্না হচ্ছিল তখন। মেনকার কাছে সে কথা জেনে খুন্তি হাতে নিয়ে রান্না করতে শুরু করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। ওই দোকান ঘিরে তখন প্রায় গোটা গ্রামের ভিড়। খুন্তি নাড়তে নাড়তে বাবু ও মেনকা বাগদির সঙ্গে কথা বলেন মমতা।
ওই দোকান থেকে এক গ্লাস চাও খান মুখ্যমন্ত্রী। সে কথা জানিয়ে মেনকা এদিন বলেন, ‘চা খেয়ে তিনি একটি ৫০০ টাকার নোট দিয়েছিলেন। আমি অবাক হয়ে যাই। আমি তাঁকে জানালাম যে চায়ের দাম তো এত নয়। তিনি তখন ওই টাকা দিয়ে মিষ্টি খাওয়ার কথা বলেন।’ বাবু বাগদি বলছিলেন, ‘আগে আমার দোকানে জলের সমস্যা ছিল। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে জানাতে সেই সমস্যা মিটেছে। তবে আমার দোকানে এখনও বিদ্যুৎ সংযোগ এসে পৌঁছয়নি। সেই কথা দিদিকে জানিয়েছি। তিনি আমাদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে একটি আবেদন জমা দিতে বলেছেন।’
মেনকাদের চায়ের দোকানের পাশে চন্দনা বাগদির চায়ের দোকান। সেখানেও এদিন গিয়েছিলেন মমতা। বিদ্যুৎ না থাকার সমস্যায় ভুগছেন চন্দনাও। সে কথা এদিন তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন। ওই সমস্যা সমাধানের আশ্বাসের পাশাপাশি চন্দনা বাগদির দোকানে বসে থাকা একটা বাচ্চার হাতে ৫০০ টাকা দিয়ে হেলিপ্যাডের দিকে এগিয়ে যান জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।