এবার গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নানের নির্ধারিত সময় ১৪ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা থেকে। সেটা চলবে ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। এটাই পুণ্যস্নানের মাহেন্দ্রক্ষণ। সুতরাং সেখানে হাজির হবেন কয়েক লক্ষ পুণ্যার্থী, সাধুসন্ত। তাঁরা স্নান সারবেন সাগরসঙ্গমে। এই পুণ্যস্নানের সময় যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে, তার জন্য এখন থেকেই তৎপরতা শুরু করেছে প্রশাসন। এই স্নানপর্ব চলবে সারারাত। তাই সাগরতটে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করছে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই বিশেষ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে।
ঠিক কী ব্যবস্থা করা হচ্ছে? মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর জলের সীমারেখা বরাবর উজ্জ্বল হাই মাস্ট আলো লাগানো হচ্ছে। এই আলো লাগানোর ফলে পাড়ের দিকের কিছুটা অংশ এবং জলের অনেকটা অংশও স্পষ্টভাবে দেখা যাবে। কুয়াশা থাকলেও বিশেষ আলোর কারণে দৃশ্যমানতা কমবে না। জনস্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সমুদ্রতট অন্ধকার থাকলে বিপদ ঘটতে পারে—এই বিষয়টি প্রথম সবার নজরে আনেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রত্যেকবারই সাগরতটে আলোর ব্যবস্থা করা হয়। এবার যেহেতু ১৪ তারিখ সারারাত স্নানের সময় তাই আলোর ব্যবস্থাও বেশি করা হচ্ছে।
ঠিক কী জানাচ্ছে জনস্বাস্থ্য দফতর? এই দফতরের সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার প্রতীক রুদ্র বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী বলার পর আমাদের টিম কাজ শুরু করেছে। কপিলমুনির মন্দির থেকে সমুদ্রে যাওয়ার জন্য ৫টি রাস্তা রয়েছে। এই রাস্তাগুলিও সম্পূর্ণ আলোকিত থাকবে। ১০–১২টি সুউচ্চ আলোকস্তম্ভ (হাইমাস্ট) বসানো হচ্ছে সমুদ্রের দিকে মুখ করে। সুতরাং দিনের মতোই আলো থাকবে গোটা চত্বরে। এছাড়া থাকছে ১০টির বেশি মোবাইল হাইমাস্ট আলো। সাগরতটে যেখানেই আলো কম রয়েছে বলে মনে হবে, সেখানে এই চলমান বাতিস্তম্ভ নিয়ে যাওয়া হবে।’ মেলার দিনগুলিতে আলোর ব্যবস্থা দেখভাল করার জন্য একটি পৃথক টিম তৈরি করা হয়েছে। এবার মেলা চত্বরে অনেক হোগলার ছাউনি ছাড়াও বিশাল অত্যাধুনিক শেডও তৈরি করছে। সব মিলিয়ে সাগরমেলায় রেকর্ড ভিড় আশা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, রবিবার সাগরে কপিলমুনি মন্দির থেকে গ্রিন এবং প্লাস্টিক ফ্রি মেলার প্রচার করা হয়েছে। সূচনা করেন সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা। এছাড়া সেখানে ছিলেন সাগর–বকখালি উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান, ভারত সেবাশ্রম এবং ইস্কন মন্দির কর্তৃপক্ষ। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, এখন থেকে প্রত্যেকদিন চলবে এই প্রচার। এদিন মন্ত্রী নিজে মেলা চত্বরে ঘুরে ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের প্লাস্টিক বর্জনের জন্য অনুরোধ করেন।