সুন্দরবন অঞ্চলে নদীর জলস্তর বাড়ছে। তার জেরে ভাঙন দেখা দিচ্ছে। রাজ্য সরকার যতটা পারছে কাজ করছে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য করাও প্রয়োজন। মানুষের জীবন–জীবিকার স্বার্থে কাজ করা উচিত। অবিলম্বে বাংলার হাতে অর্থ দিয়ে সাহায্য করা উচিত কেন্দ্রের। শীতকালীন অধিবেশনে বুধবারই এভাবে সোচ্চার হয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার। এবার এই গঙ্গা ভাঙন রোখার কাজে কেন্দ্রের ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পের টাকা পেতে উদ্যোগী হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি নীতি আয়োগের সামনে রাখতে এবং এই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা আনতে সেচ সচিবকে নয়াদিল্লিও যেতেও বলেছেন তিনি বলে খবর।
বিজেপি সাংসদ থেকে নেতারা বারবার অভিযোগ তোলেন কেন্দ্রীয় প্রকল্প রাজ্যে চালু হতে দিচ্ছেন না বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের কৃষকদের প্রকল্পে ছাড়পত্র দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু সেখানে বিতর্ক রয়েছে, বাংলার অনেক কৃষকই এই কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা পাচ্ছেন না। বুধবার মালদহে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভাতেও এই গঙ্গা ভাঙনের বিষয়টি উঠে আসে। এখানেই বৈষ্ণবনগরের বিধায়ক চন্দনা সরকার মুখ্যমন্ত্রীকে জানান, ভাঙনের জেরে তিনটি হাইস্কুলে এখন ঠাঁই হয়েছেন ভিটেহারারা। তাই স্কুল খোলা যাচ্ছে না। এই কথা শুনে মুখ্যমন্ত্রী খোঁজ নিয়ে দেখেন, বিষয়টি সঠিক। এই ভাঙন হয়েছে ফরাক্কা ব্যারাজ এলাকায়। আর এই এলাকা কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে।
তখনই মুখ্যমন্ত্রী গঙ্গা ভাঙনকে ‘কেন্দ্রের বিষয়’ বলে উল্লেখ করেন। আর তা রোধে ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পের দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘গঙ্গা ভাঙন মানুষের জীবনে বড় সমস্যা। কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত। ভাঙন ঠেকাতে মাস্টার প্ল্যান করা উচিত। নমামি গঙ্গে প্রকল্পে এটা ঢোকানো উচিত। কিন্তু কেন্দ্র কিছুই করছে না। আগে কেন্দ্র থেকে ফ্লাড ম্যানেজমেন্টে বা বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজে টাকা আসত। কিন্তু এখন সে টাকাও বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। ফরাক্কা ব্যারাজে ড্রেজিংও করছে না।’
এই নিয়ে কী নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী? এই ঘটনা নিয়ে মুখ্যসচিবকে তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে নীতি আয়োগের সঙ্গে কথা বলুন। কেন্দ্রকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানান। কেন্দ্র থেকে টাকা আনতে সেচ সচিবকে নয়াদিল্লিতে পাঠান। ভাঙন এলাকায় মানুষ যাতে বসবাস না করে, পাকা বাড়ি তৈরি না করে, সেটাও লক্ষ্য রাখতে হবে।’