সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর সেটা সিঙ্গুর দিয়েই শুরু করতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কারণ এই সিঙ্গুর আন্দোলনই ছিল ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট। তাই এবার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে এই সিঙ্গুর থেকেই রাজ্যের মানুষকে বার্তা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী বলে সূত্রের খবর। একদিকে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা আটকে রাখা হয়েছে। তা সত্ত্বেও রাজ্যের নিজস্ব তহবিলের তিন হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি ১২ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ রাস্তার শিলান্যাস সিঙ্গুর থেকেই করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কবে এই শিল্যান্যাস হবে? আগামী ২৮ মার্চ এই শিলান্যাস অনুষ্ঠান করা হবে। নবান্ন সূত্রে খবর, এই অনুষ্ঠান করার জন্য প্রাথমিকভাবে হুগলি জেলার তিনটি জায়গা তালিকায় রাখা হয়েছিল। যার মধ্যে বেছে নেওয়া হয়েছে সিঙ্গুরকেই। সিঙ্গুরের জাতীয় সড়ক লাগোয়া রতনপুরে আড়াই কিলোমিটার রাস্তার প্রতীকী শিলান্যাস করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রত্যেকটি জেলার রাস্তাও তিনি ওইদিন ভার্চুয়াল মাধ্যমে শিলান্যাস করবেন। সিঙ্গুরে সেদিন যোগ দেবেন প্রায় এক লক্ষ মানুষ। এই অনুষ্ঠানের দায়িত্বে রয়েছেন পঞ্চায়েত প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্না।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটতে চলেছে? পথশ্রী–রাস্তাশ্রী প্রকল্পের অধীনে মোট ১২ হাজার ৮২১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ৯ হাজার ২১৫টি গ্রামীণ সড়ক তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে রাজ্য সরকার। যার মধ্যে সব থেকে বেশি দৈর্ঘ্যের (১,৭২০ কিলোমিটার) রাস্তা হবে হুগলি জেলায়। এই কাজ যখন হচ্ছে তখন রাজ্যের হাতে বড় ইস্যু ১০০ দিনের কাজ এবং আবাস প্রকল্পের প্রদেয় টাকা না পাওয়া। সেটা আটকে রেখেছে মোদী সরকার। তাই বাংলার প্রতি বঞ্চনার বিরুদ্ধে আগামী ২৯ এবং ৩০ মার্চ কলকাতায় ধরনায় বসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর ২৮ মার্চ, রাজ্যজুড়ে মানুষকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী বার্তা দেন, এখন সেটাই দেখার।
আর কী জানা যাচ্ছে? তবে শুধু সিঙ্গুরেই শেষ নয়। রাজ্যের প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত, ব্লক, মহকুমা এবং জেলা সদরে পৃথকভাবে শিল্যানাস অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে বলা হয়েছে নবান্নের পক্ষ থেকে। এই অনুষ্ঠানে যে জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন, তাঁদের নাম এই প্রকল্পের জন্য পঞ্চায়েত দফতরের পৃথক পোর্টালে তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানে অন্তত ৫০০ জনের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। সিঙ্গুর থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রত্যেকটি অনুষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা হবে বলে খবর। আর এই কাজ করেই প্রধান বিরোধীদল বিজেপিকে জবাব দেওয়ার কৌশল নেওয়া হয়েছে। কারণ এই রাস্তাশ্রী প্রকল্প নিয়েও নানা কটূক্তি করেছেন শুভেন্দু অধিকারী।