মোদী–বিরোধী রাজনীতিকে আজ অবশ্যই অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছেন তিনি। স্লোগান তাঁর একটাই, মোদীমুক্ত ভারত। সেই প্রত্যয়ের প্রতিচ্ছবি ছিল ঝাড়গ্রাম থেকে ঘাটাল—সর্বত্র। ঝাড়গ্রামে দেখা গিয়েছিল, তিনি হাত ধরেছেন বীরবাহা আর এক আদিবাসী রমণীর। বাদ্যযন্ত্রের বোলে পা মেলালেন দেশের ‘ফায়ার ব্র্যান্ড লেডি’। তখন মোদী–শাহ, রাজনীতি, পেগাসাস, মসনদে হ্যাটট্রিক কোথায় কী! জঙ্গলমহলের সঙ্গে একাত্ম অগ্নিকন্যা, ৩০বি, হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের টালিচালার বাসিন্দা। হ্যাঁ, তিরি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার তাঁকেই দেখা গেল ঘাটালের বানভাসী পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে মানুষের হাত ত্রান তুলে দিতে।
তবে ঝাড়গ্রামে বিশ্ব আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, আবহাওয়া ভাল থাকলে তিনি ঘাটালে যাবেন। মঙ্গলবার ঘাটালে গেলেন তিনি। কথা রাখলেন। আর তাঁকে দেখে উচ্ছ্বাসের সিংহগর্জন থেকে করতালির শব্দে কান পাতা দায়। ধীর পায়ে আরও একটু সামনে এগিয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। সবার হাতে ত্রান তুলে দিয়ে বার্তা দিলেন তিনি আজও মানুষের জন্য গলা পর্যন্ত জলে নামতে পারেন। সেখানকার বাসিন্দাদের ত্রাণ সামগ্রী বিলি করেন তিনি। বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন।
এরপরই সেখানে দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘ঘাটালের পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। বিমান থেকে সব দেখলাম। ছবিও তুলেছি। কলকাতায় ফিরে গিয়ে রিপোর্ট তৈরি করব। পরিকল্পিতভাবে বন্যা করা হচ্ছে। ৫০০ কোটি টাকায় চেকড্যামগুলি তৈরি হয়েছে। কিন্তু পরিকল্পনা করে কাজ হচ্ছে না। তাই প্রশাসনকে আরও বেশি কাজ করতে হবে। আরও অনেক ক্যাম্প তৈরি করতে হবে।’
তবে মানুষের এই দুঃখ–দুর্দশার জন্য যে কেন্দ্রীয় সরকার দায়ী তা বলতে ভোলেননি তিনি। ঘাটাল থেকেই তিনি তীব্র স্বরে বলেন, ‘বারবার কেন্দ্রীয় সরকারকে বলেছি। কিন্তু তার পরেও ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের অনুমোদন দিচ্ছে না কেন্দ্র। এরকম হলে বারবার বন্যা তো হবেই। কেন্দ্রের কাছে আবার মাস্টার প্ল্যানের দাবি জানাব।’ এদিন ঘাটালে নেমে অনুকূল ঠাকুরের আশ্রমে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে গিয়ে মন্দিরের পুরোহিতদের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। আশ্রমের বাইরে জড়ো হয়েছিলেন কিছু মানুষ। তাঁদের ত্রাণ দেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতার সঙ্গে রয়েছেন ঘাটালের সাংসদ দেব, রাজ্যের সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। তাঁদের সঙ্গে নিয়ে বন্যা কবলিত এলাকা খতিয়ে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী।