স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ফর্ম ফিলাপ করেছিলেন। কিন্তু ছবি তোলার ডাক আসছিল না। স্থানীয় পুরসভায় বারবার গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেও উত্তর মিলছিল না। শূন্য হাতেই বৃদ্ধকে ফিরে আসতে হতো। তিনি কোন্নগরের বাসিন্দা, ৮৩ বছর বয়সের মিহির গঙ্গোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতিতে এক পরিচিতের মাধ্যমে তাঁর হয়রানির খবর পৌঁছয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের ব্যবস্থা করল জেলা প্রশাসন।
এই ঘটনার পর মিহিরবাবু বলেন, ‘একটা স্বাস্থ্যসাথী কার্ড পেতে মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত যেতে হল! যাঁদের সেই উপায় নেই, তাঁরা কি প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকবেন?’ কোন্নগর পুরসভার এক নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মিহিরবাবু। এই ঘটনা নিয়ে মিহিরবাবু বলেন, ‘এখানের দায়িত্বে থাকা পুরসভার আধিকারিককে প্রশ্ন করলে উত্তর মিলত, এই সংক্রান্ত আপডেট আসেনি। পুরসভায় গেলে শুনতে হতো, স্বাস্থ্য ভবনে গিয়ে খোঁজ নিন। ওঁরা একবারও বয়সের কথা ভাবলেন না।’
কিভাবে পেলেন স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড? মিহিরবাবু বলেন, ‘গত ২১ জানুয়ারি পরিচিতের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীকে বিষয়টি জানানো হয়। তারপরই স্বাস্থ্য ভবন থেকে ফোন আসে। এরপর মেয়ের কার্ডে আমার নাম যুক্ত করতে কর্মীরা বাড়িতে আসেন। একবছর ধরে যা ঝুলে ছিল, তার নিষ্পত্তি হয় কয়েক ঘণ্টায়। মুখ্যমন্ত্রী মানুষকে সাহায্য করতে চাইলেও প্রশাসনের নিচুতলার কর্মীদের সদিচ্ছার অভাব স্পষ্ট।’
এই ঘটনায় গোটা কোন্নগরে ঢি ঢি পড়ে গিয়েছে। কারণ সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করেছেন। নড়ে গিয়েছে পুরসভার স্তম্ভ। এই বিষয়ে কোন্নগর পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান তন্ময় দেব বলেন, ‘আমি তিন মাস এসেছি। কী হয়েছে জানি না। তবে পরিষেবা পেতে কাউকে যেন হয়রানি হতে হয় সেদিকে লক্ষ রাখব।’