বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখবেন বলেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিশ্বভারতীকে তিনি রবীন্দ্রনাথের চোখে দেখেন গেরুয়াকরণের চোখে নয় বলেও মন্তব্য করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পরিবর্তে একটা চাঁচাছোলা ভাষায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন উপাচার্য। যার পর রাজ্য সরকার বনাম বিশ্বভারতী সংঘাত শুরু হয়। এবার পূর্ব বর্ধমানের সভামঞ্চ থেকে আবার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে একহাত নিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? এই বিজ্ঞপ্তি তাঁর কাছেও পৌঁছেছে। যা দেখে তিনি অবাক এবং ক্ষুব্ধ। তাই আজ নাম না করে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে মুখ্যমন্ত্রী চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, ‘আমি জানি কী করে কী করতে হয়। বিশ্বভারতীতে ছাত্রদের উপর জুলুম চলছে। ছাত্রছাত্রী, অধ্যাপকদের উপর অবিচার হচ্ছে। আদালতে মামলা চলছে। কী বলে দেখি। তারপর জনগণের আদালতে বিচার হবে। আমি বিশ্বভারতীর পড়ুয়া থেকে অধ্যাপকদের পাশে আছি।’
কী বলা হয়েছিল বিশ্বভারতীর প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে? নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন যে বাড়িতে থাকেন সেখানের জমি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন উপাচার্য। তখন মুখ্যমন্ত্রী নিজে গিয়ে জমির কাগজ অমর্ত্য সেনের হাতে তুলে দেন। যা অপ্রাসঙ্গিক বলে দাবি করেন উপাচার্য। তারপর বিশ্বভারতীয় কয়েকজন অধ্যাপক এবং ছাত্রছা্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। সমস্যায় তিনি পাশে আছেন বলে জানান। তারপরই প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করে বিশ্বভারতী। যেখানে বলা হয়েছিল, ‘পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী কান দিয়ে দেখেন। কারণ তাঁকে স্তাবকরা যা শোনান তিনি তাই বিশ্বাস করেন এবং টিপ্পনি করেন। বোলপুরের রাঙাবিতানে বিশ্বভারতীর অর্থনীতি বিভাগের একজন শিক্ষক, পাঁচজন ছাত্র ও একজন গবেষণারত ছাত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এদের সঙ্গে কথা বলে তিনি বেশ কিছু দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী একটু বাড়াবাড়ি করলেন না কি? অবশ্য তিনি যদি নিজেকে আদালতের উপরে ভাবেন তবে বলার কিছু নেই।’
উল্লেখ্য, বীরভূম সফরে এসে বিশ্বভারতীর আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানকার সাসপেন্ড হওয়া পড়ুয়া, কয়েকজন অধ্যাপক দেখাও করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে নানা অভিযোগের কথা তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে জানান। মুখ্যমন্ত্রী তাতে বলেছিলেন, পড়ুয়া–অধ্যাপকদের যদি ক্ষমতার জোরে মেরুকরণের চেষ্টা করা হয় তাহলে তিনি তার বিরোধিতা করবেন। আর বিজ্ঞপ্তিতে লেখা হয়েছিল, ‘আপনার আশীর্বাদ না থাকলে আমাদের সুবিধা। কারণ আমরা প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনে চলতে অভ্যস্ত।’